মঙ্গলবারই সামনে এসেছিল যোগী রাজ্যের এক বিজেপি নেতার কেলেঙ্কারির কথা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছিলেন উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরের এক ছাত্রী। আর অদ্ভুত ভাবে ওই অভিযোগ আনার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না ওই অভিযোগকারিণীর। এ নিয়েই এবার বিজেপি নেতাকে বিঁধে একের পর এক টুইট করলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢড়ার৷ বললেন, মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে অক্ষম যোগী সরকার৷
প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করে ওই ছাত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর আইন কলেজের ম্যানেজমেন্টে থাকা ওই প্রভাবশালী নেতা এবং সন্ন্যাসী অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছেন। আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। ওঁর বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণ রয়েছে আমার কাছে। আমার পরিবারকেও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন উনি। কী অবস্থায় রয়েছি, শুধুমাত্র আমিই জানি। সন্ন্যাসী হয়েও আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন উনি। বলছেন, পুলিশ, জেলাশাসক এবং প্রশাসনিক কর্তারা ওঁর পকেটে। কেউ ওঁকে ছুঁতে পর্যন্ত পারবে না। আপনাদের কাছে সুবিচার চাইছি আমি।’
এর আগেও অনেকে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভয় দেখিয়ে তাঁদের মুখবন্ধ করে দেওয়া করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ভিডিওটি ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। আর তার পর দিন থেকেই নিখোঁজ ওই তরুণী। স্বামী চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন তাঁর বাবা। ছাত্রীর বাবার অভিযোগ, বিজেপি নেতা স্বামী চিন্ময়ানন্দ তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে আটকে রেখেছে৷ তিনি অভিযোগ করেন, বেশ কয়েকদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল তাঁর বছর তেইশের মেয়ে৷
আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি নেতাকে কটাক্ষ করে একগুচ্ছ টুইট করেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা৷ তিনি লেখেন, এমন কোনও দিন নেই যেদিন উত্তরপ্রদেশ সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে৷ মহিলাদের আশ্বস্ত করতে পারে যে তারা সুরক্ষিত৷ এরপরের টুইটেই এই ঘটনাকে উন্নাওকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি৷ লেখেন, উত্তরপ্রদেশের মেয়েরা তাদের নিরাপত্তা বিষয়ে যোগী সরকারের এই ভূমিকা ভাল চোখে দেখছে না৷
অভিযোগকারিণীর মা জানিয়েছেন, রাখির দিন শেষ বার বাড়িতে এসেছিলেন মেয়ে। সারাক্ষণ ফোন বন্ধ রাখার কারণ জানতে চেয়েছিলেন তিনি। জবাবে মেয়ে বলেছিলেন, ‘একটানা ফোন বন্ধ থাকলে বুঝি নিও বিপদে পড়েছি। আমার হাতে ফোন নেই।’ মায়ের কথায়, ‘খুব কষ্টের মধ্যে ছিল ও। জানিয়েছিল কলেজ থেকে নৈনিতাল পাঠাচ্ছে ওকে। তারপর আর খোঁজ পাইনি ওর।’ আর তাঁর বাবার কথায়, ‘আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে কিছু বলেনি ও। কিন্তু রাখির দিন যখন এসেছিল, খুব চিন্তিত দেখাচ্ছিল ওকে। গত চারদিন ধরে ওর কোনও খবর পাইনি।’