সোমবার টানা তিন ঘণ্টার প্রশাসনিক বৈঠকের পর বিকেল পাঁচটা নাগাদ লোকসংস্কৃতি ভবন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। গন্তব্য তখনও অজানা প্রশাসনিক কর্তাদের। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গী দুই সহকর্মী ফিরহাদ হাকিম এবং স্বপন দেবনাথ। শহর পূর্ব বর্ধমানের উপকণ্ঠে আলিশায় আদিবাসীদের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন মমতা। চা খেতে খেতে শুনেছিলেন তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা। তাঁরা জানিয়েছিলেন বাড়ি ও স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ছাগল, হাঁস–মুরগির দাবি। মমতা আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁদের সমস্ত দাবি মিটবে। মমতা আশ্বাস দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ওই পরিবারকে বিতরণ করা হল হাঁস-মুরগি।
গতকাল আলিশার দাসপাড়ায় আদিবাসী মহিলাদের হাতে এগুলি তুলে দিলেন রাজ্যের প্রাণি সম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে এই দাসপাড়ায় ঝর্না রুইদাসের বাড়িতে এসে চা খেয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এখানকার আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের কাছে জানতে চান তাঁদের কোনও অভাব–অভিযোগ আছে কিনা। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাড়ি ও স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ছাগল, হাঁস–মুরগির দাবি করেছিলেন। মমতা বলেন ‘আগামী কালের মধ্যে তোমাদের ছাগল, হাঁস–মুরগি দেওয়া হবে। এবং পরবর্তীকালে বাড়িও দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের প্রাণি সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এই আদিবাসী পাড়ার ১২টি পরিবারের হাতে ছাগল এবং মুরগি তুলে দিলেন।
মমতার কথা মত সব হওয়ায় খুব খুশি আদিবাসী মহিলা ঝর্না রুইদাস। তিনি বলেন, ‘দিদি গতকাল বলে গিয়েছিলেন আমাদের ছাগল দেবেন। তাই তিনি ছাগল, হাঁস–মুরগি সবই দিয়েছেন। এজন্য আমরা খুব খুশি হয়েছি। এর পাশাপাশি আমাদের একটি ঘর হলে খুব ভাল হত। কারণ, ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। মমতা বাড়িও দেবেন বলে কথা দিয়ে গেছেন। তাই বাড়ি পাবেন বলেও আশাবাদী ঝর্নাদেবী।
প্রাণীগুলি তঁাদের হাতে তুলে দিয়ে স্বপনবাবু বলেন, ‘গতকাল পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন। বৈঠক শেষে তিনি আলিশা গ্রামের দাসপাড়ায় আচমকাই একটি বাড়িতে ঢোকেন। এই বাড়ির বারান্দায় বসে এখানকার মহিলাদের কাছে জানতে চান, তোমরা কি ছাগল, হাঁস ও মুরগি পুষতে পারবে? তঁারা, হ্যাঁ পারব বলাতে তিনি আমাকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পেয়ে আজকে দাসপাড়ার বারোটি পরিবারকে একটি করে ছাগল ও ৫টি করে হাঁস–মুরগি তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও দাসপাড়ার বাইরেও অনেক বাড়ি আছে। তাঁরাও যদি আমাদের তালিকা করে দেন, আমরা তাঁদের এইসব প্রাণী বিতরণ করব বলে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন।’