একের পর এক জনকল্যাণকর প্রকল্পের ঘোষণা করেই থেমে থাকেন না তিনি। এর পাশাপাশি কেউ যাতে সেই সকল সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকেও সর্বদা কড়া নজর তাঁর। সে কারণেই জনগণের থেকে নেওয়া কাটমানি ফেরত দিতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আগেই। এবার দলের নামে টাকা তোলা বন্ধ করতে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘কেউ দলের নাম করে টাকা তুললে তাঁকে গ্রেফতার করিয়ে দেব। প্রশাসন কঠোর হাতে এর মোকাবিলা করবে।’
মঙ্গলবার হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে দলের নামে টাকা তোলার অভিযোগ নিয়ে সরব হন মমতা। তিনি বলেন, ‘জেলায় কেউ কেউ বলেন যে কোনও কাজ করতে গেলেই নাকি দলের কাউকে কাউকে কলকাতায় টাকা দিতে হয়। আমি আপনাদের স্পষ্ট করে বলছি, দলের কাউকে টাকা দিতে হয় না। কোনও অফিসারকে কলকাতায় টাকা পাঠাতে হয় না। আমরা কারও কাছ থেকে টাকা চাই না।’ এই সূত্রেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘যারা এই ভাবে টাকা তোলে, তারা নিজের জন্য তোলে। এই টাকা কারও কাছে যায় না।’ জনগণকে সতর্ক করে তাঁর পরামর্শ, ‘আমি খুব স্পষ্ট করে বলছি, কেউ কাউকে একটাকাও দেবেন না। দল কারও থেকে কোনও টাকা নেয় না।’
পুলিশকে টাকা তুলে কলকাতায় পাঠাতে হয় কি না, এ ব্যাপারে সোমবারই বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে জানতে চেয়েছিলেন মমতা। মঞ্চেই রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তোমরা কি টাকা নাও?’ সুরজিৎবাবু জবাবে বলেছিলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না।’ আর ২৪ ঘণ্টা পরে হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকে একই ভাবে দলের নেতা-কর্মীদের টাকা তোলার অভিযোগ নিয়ে কঠোর অবস্থান নেন মমতা। সেই প্রসঙ্গেই টেনে আনেন বামফ্রন্টের প্রয়াত মন্ত্রী বিনয় চৌধুরীর কথাও।
বিনয় চৌধুরী নিজেদের সরকারকে ঠিকাদারদের সরকার বলেছিলেন। তাই সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি জানান, পূর্বতন সরকারের মতো তৃণমূল কারও থেকে টাকা নিয়ে চলে না। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে দলের কয়েকটি আসন কমলেও ফের নব উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একুশের বিধানসভাকে সামনে রেখে ফের জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করে কাজের পর্যালোচনায় মন দিয়েছেন তিনি। সোমবার পূর্ব বর্ধমানের পর মঙ্গলবার হুগলির প্রশাসনিক বৈঠকেও মমতা একটি কথাই স্পষ্ট করে দেন, মানুষ কাজ করাটাই এক ও একমাত্র লক্ষ্য প্রশাসনের।