হাঁটুর চিকিৎসায় ফের বড় সাফল্য পেল রাজ্য। সফলভাবে হাঁটু প্রতিস্থাপন হল এ বার জেলা হাসপাতালে। ৬৫ বছরের প্রৌঢ়ার হাঁটু প্রতিস্থাপন করে নজির গড়ল আসানসোল জেলা হাসপাতাল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথায়, শিবানী দেবীর স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকায় লক্ষাধিক টাকার অস্ত্রোপচার বিনামূল্যে হয়েছে। লক্ষাধিক টাকার অস্ত্রোপচার হল একদম বিনামূল্যে। যা নিয়ে রীতিমতো ধন্য ধন্য পড়ে গেছে জেলায়।
জানা গেছে, হাঁটুর ব্যথা নিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বাঁকুড়ার বড়জোড়া কেশবপুরের বাসিন্দা শিবানী আকুল। তাঁর স্বামী গোবর্ধন আকুল জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই হাঁটুর ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন শিবানী। বাঁকুড়ার নানা জায়গায় চিকিৎসা হয়েছে, তবে সেরে ওঠেননি। তারপরই আসানসোল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শিবানী দেবীকে ভর্তি করা হয়।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক নির্ঝর মাঝি জানিয়েছেন, দুই হাঁটুতেই ক্ষয় শুরু হয়েছিল শিবানী দেবীর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যার নাম অ্যাডভান্স অস্টিও আর্থ্রাইটিস। এই রোগে হাঁটাচলা প্রায় বন্ধ হয়ে যায় রোগীর। হাঁটুতে অসহ্য যন্ত্রণা হতে থাকে সর্বক্ষণ। এই রোগ নিরাময়ের একমাত্র উপায় হল হাঁটু প্রতিস্থাপন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ডঃ নির্ঝর মাঝির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু হয় শিবানী দেবীর। তৈরি হয় মেডিক্যাল টিম। যাতে ছিলেন ডঃ নির্ঝর মাঝি, ডঃ শ্রীকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, ডঃ সুমন সরকার এবং আরও কয়েকজন। ডাক্তার নির্ঝর মাঝির কথায়, ‘‘প্রথমে এক্স-রে করেই আমরা বুঝতে পারি দ্রুত হাঁটু প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। এই অস্ত্রোপচারের জন্য যে ধরনের পরিকাঠামো দরকার হয়, সেটা সাধারণত জেলা হাসপাতালগুলোতে থাকে না। তবে আমাদের সুপার স্পেশালিটি বিল্ডিং তৈরি হওয়ার পর থেকে পরিকাঠামো অনেকটাই উন্নত হয়েছে।’’
ডাক্তারবাবু বলেন, এই হাসপাতালে হিপ প্রতিস্থাপন বার কয়েক হয়েছে। তবে হাঁটু প্রতিস্থাপন এই প্রথম। হাঁটু বা হিপ প্রতিস্থাপন হল অতি ‘হাই টেক’ অস্ত্রোপচার। এ ক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে ভয়ের, তা হল সংক্রমণের আশঙ্কা। সংক্রমণ এড়াতে প্রয়োজন পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও ডাক্তারদের সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণ। শিবানীদেবীর ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের হাঁটু অস্ত্রোপচার সম্পূর্ণ সফল হয়েছে। তিনি এ বার সুস্থ ভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।