বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে, তেমনি এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও। দেশের এ হেন অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। এবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বাড়তি সঞ্চয়ে ভাগ বসানোয় এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী।
রাহুলের দাবি, দেশের অর্থনীতির দফারফা করে ছেড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিপর্যয় সামাল দিতে না পেরে এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে হাত বসাচ্ছে। কেন্দ্র যা করছে তা চুরির সমান বলেই মনে করেন রাহুল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের টাকায় ভাগ বসানো নিয়ে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস তাদের টুইটার হ্যান্ডলে লিখেছে, ‘কেন্দ্রীয় সরকারকে এক লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কেন্দ্রীয় বাজেটে ঠিক এই পরিমাণ টাকার হিসাবই দেওয়া হয়নি। অত টাকা কোথায় গেল? বাজেটে তার কোনও উল্লেখ থাকল না কেন? এ ভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে লুটপাট চালালে আমাদের অর্থনীতি আরও ভেঙে পড়বে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্রেডিটও খারাপ হবে।’’
সোমবার নিজেদের বাড়তি সঞ্চয় থেকে কেন্দ্রকে এক লক্ষ ৭৬ হাজার কোটির বেশি অর্থসাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। বিষয়টি সামনে আসতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশেষজ্ঞ মহলে। তার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে টুইটারে মোদী সরকারকে একহাত নেন রাহুল। তিনি লেখেন, ‘দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী। এখন নিজেরাই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না। কিন্তু বিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে চুরি করেও লাভ হবে না। এটা খানিকটা ডাক্তারখানা থেকে ব্যান্ডেড চুরি করে গুলির ক্ষত চাপা দেওয়ার মতো।’
শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্তা রঘুরাম রাজনের মতে, বাড়তি ভাঁড়ার কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে গেলে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্রেডিট রেটিং বা মূল্যায়ন কমতে পারে। প্রসঙ্গত, কাউকে ঋণ দেওয়া কতটা ঝুঁকির, তারই মূল্যায়ন হল এই ক্রেডিট রেটিং। অর্থাত্, রেটিং যত ভালো, তাকে ধার দেওয়ার ঝুঁকি তত কম। তাই রেটিং বাড়লে, তুলনায় কম সুদে ধার পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কমে সুদের বোঝাও। রাজনের বক্তব্য, আরবিআইয়ের রেটিং ‘এএএ’ থেকে কমলে, সেক্ষেত্রে তাদের ধার নেওয়ার খরচ বাড়বে। যা পুরো অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। যদিও রিজার্ভ ব্যাংকের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি, এই ঝুঁকি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। তবে শুধু রাজন নন, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ অনেকেই মনে করেন, বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে পুঁজি জোগানো ছাড়া এই টাকায় হাত দেওয়া উচিত নয়।