কথায় আছে, কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ। এবার তেমনই এক ঘটনা ঘটল প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির শেষকৃত্যে। দিল্লীর নিগমবোধ ঘাটে ততক্ষণে শোকের ছায়া। রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে দেশের তাবড় ব্যক্তিত্বদের প্রায় অনেকেই তখন উপস্থিত প্রয়াত জেটলির শেষকৃত্যে। সেখানে যেমন হাজির ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতো ব্যক্তিত্বরা, তেমনই হাজির ছিলেন ব্যবসায়ী মহলেরও একাধিক নামী দামী ব্যক্তিত্ব। আর এরই মধ্যে ঘটে যায় এক অবাক কাণ্ড! মানুষের শোকের এবং ভিড়ের সুযোগ নিয়ে বড়সড় হাতসাফাই চালায় চোরেরা! যার ফলে ফোন খোয়ালেন মোট ১১ জন! এঁদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন অসুস্থতার পরে গত সপ্তাহে প্রয়াত হন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি। রাজনৈতিক মহলে ঘনিয়ে আসে শোকের ছায়া। বহু মানুষ ভিড় করেন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। তবে এমন সময়েও যে অনেকেই নিজের কুপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তা বোঝা গেল এই সময়ে! রবিবার দিল্লীর নিগমবোধ ঘাটে অরুণ জেটলির শেষকৃত্যের আয়োজন করা হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে জমায়েত হয়েছিলেন জেটলির পরিবারের এবং রাজনৈতিক মহলের বহু মানুষ। যথেষ্ট ভিড় হয়েছিল প্রাক্তন মন্ত্রীর শেষকৃত্যে। এই ভিড়েই বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়-সহ আরও ১১ জনের ফোন চুরি হয়ে যায় বলে অভিযোগ।
সোমবার পতঞ্জলি সংস্থার প্রবক্তা এসকে তিজারাওয়ালা টুইট করে এই বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, রবিবার জেটলির শেষকৃত্যে তাঁর মোবাইল চুরি যায়। টুইটটিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দিল্লী পুলিশকে ট্যাগ করে তিজারাওয়ালা লিখেছেন, ‘যখন আমরা অরুণ জেটলি জিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, যে ফোন থেকে এই ছবিটি তুলেছি, সেটিও আমায় শেষ বিদায় জানায়। শ্মশান ঘাটকে লোকজন ছাড়ছে না, ভিড়ের সুযোগ নিয়ে চুরি করছে, এটা খুবই দুঃখের।’ শুধু তাঁর একার নয়, বাবুল সুপ্রিয়-সহ মোট ১১ জনের মোবাইল চুরি হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি। একের পর এক টুইটে নিজের হারানো ফোনের বর্তমান লোকেশনও শেয়ার করেন।
নিগমবোধ ঘাট সংলগ্ন কাশ্মীরি গেট থানা থেকে জানানো হয়েছে, বাবুল সুপ্রিয়-সহ পাঁচজন ফোন হারানোর অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তও শুরু হয়েছে। পুলিশের কথায়, মোবাইল চোরেরা সব সময়েই কাজ হাসিলের জন্য এমন ভিড় খুঁজে বেড়ায়। আর সেই ভিড়ে মিশে থাকা মানুষজন যদি শোকার্ত বা অন্যমনস্ক থাকেন, তা হলে যে তা তাদের কাজে বাড়তি সুবিধা যোগ করে, তা বলাই বাহুল্য। সেই সুযোগই কাজে লাগিয়েছে চোরের দল। উল্লেখ্য, গত মাসেও দিল্লীতে একই ঘটনা ঘটেছিল। বিজেপি সাংসদ এবং সুফী গায়ক হংসরাজ হংসের এক শোভাযাত্রায় চুরি গেছিল একাধিক মোবাইল ফোন। এখনও উদ্ধার হয়নি সেগুলো।