লোকসভা ভোটের পর থেকেই সরকারি প্রকল্পে কাটমানি নেওয়া ও দুর্নীতি রোধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েও দলীয় নেতা-কর্মীদের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। আজ, সোমবার বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকেও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ভুল নাম নথিভুক্ত হওয়া ও দুর্নীতি নিয়ে ফের সরব হলেন তিনি। খাদ্যসাথী থেকে ডিজিটাল রেশন কার্ড, ভোটার লিস্ট প্রায় সর্বত্রই ভুল তথ্য নথিভুক্ত করছেন সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসাররা, এই অভিযোগ তুলে নাম না করে বাম আমলে নিয়োজিত আধিকারিদের একাংশকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘এতদিন কারও চাকরি খাইনি, কিন্তু আর বরদাস্ত করা হবে না।’
প্রসঙ্গত, এদিন পূর্ব বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বৈঠক থেকেই তাঁর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ডেটা এন্ট্রির কাজে যুক্ত কর্মীরা ইচ্ছা করেই ভুল তথ্য নথিবদ্ধ করেন। সেইজন্যই গ্রামাঞ্চলের মানুষের সরকারি পরিষেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে। মমতা জানান, ডেটা এন্ট্রির কাজে যুক্ত অনেকেই আগের ‘পন্থীর লোক’, তাঁরা কিছুতেই নিজেদের পরিবর্তন করছেন না। তাঁরা ভাবছেন, মানুষকে হয়রানির মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে বদনাম করে দিয়ে যাবেন। এরপরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আজ পর্যন্ত কারও চাকরি খাইনি, কিন্তু আর বরদাস্ত করা হবে না।’ ডেটা অপারেটরদের সাবধান করার জন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেন, ডিজিট্যাল রেশন কার্ডেও ভুল নাম নথিভুক্ত হয়েছে, বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। রেশন ডিলাররা ভুয়ো নামে চাল তুলে বিক্রি করে দিচ্ছে। তাঁর দাবি, ভোটার লিস্ট তৈরির সময় আসল ভোটারের নাম বাতিল হয়, যারা ভোটার নয় তাদের নাম ঢোকানো হয়। রাজ্যের খাদ্যসাথী প্রকল্পের ক্ষেত্রেও একই ধরণের সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে রাজ্যের মোট জনসংখ্যা ৯ কোটির কিছু বেশি সেখানে খাদ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে ৯ কোটি ৩ লক্ষ নাম নথিভুক্ত হয়েছে। তাও অভিযোগ উঠছে অনেকেই পরিষেবা পাচ্ছেন না। এই ধরণের ভুল দ্রুত সংশোধন করার নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া, বাংলা আবাস যোজনায় যে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি তৈরি হচ্ছে সেখানে যেন কোনও দুর্নীতি যেন না হয় সে ব্যাপারেও আধিকারিকদের আজ সাবধান করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।