সরকারি হাসপাতালের মেশিন বন্ধ মানে ভোগান্তির একশেষ। পার্ক সার্কাস লাগোয়া কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ নিউরোসার্জারি বিভাগের সি-আর্ম মেশিন। হতাশ হতে হতে হতাশ হওয়াও ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসকদের একাংশ। এমন একটা সময়ে সুখবর এলো।
ন্যাশনালের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য দফতর মঞ্জুর করল প্রায় দু’ কোটি টাকা (১ কোটি ৮০ লক্ষ) দামের সি-আর্ম মেশিন। তা আসছে জার্মানি থেকে। রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির নিউরো সার্জারি বিভাগে এখনও পর্যন্ত এই সি-আর্ম মেশিন বসেনি।
স্বাস্থ্যভবনের এক শীর্ষ সূত্র এ খবর জানিয়েছে, এই মেশিনে নিউরোসার্জারি করার বিশেষ সুবিধাযুক্ত যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্যের স্নায়ুরোগ চিকিৎসার উৎকর্ষকেন্দ্র বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস-এ এত দামি ও আধুনিক সি-আর্ম মেশিন নেই বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। শুধু আধুনিক সি-আর্মের কাজই করবে না মেশিনটি, এর মাধ্যমে স্ট্রোকের অত্যাধুনিক চিকিৎসা করা যাবে। জেনেরিক নাম হাই এন্ড সি-আর্ম উইথ ডিএসএ ফেসিলিটি।
এখানকার বিভাগীয় প্রধান ডাঃ সুমিত দেব বলেন, আমাদের বিভাগের জন্য এর থেকে আনন্দের খবর আর হতে পারে না। হাসপাতাল, কলেজ কর্তৃপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আর অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর অকুণ্ঠ ধন্যবাদ প্রাপ্য। এই মেশিনটি চালু হলে ১০-১৫ লক্ষ টাকার অপারেশন এখানে হবে সম্পূর্ণ বিনা পয়সায়। সূত্রের খবর, মেশিনটি কেনার বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে যন্ত্রটি নিউরোসার্জারি বিভাগের চারতলার ওটিতে বসে যাবে।
নিউরোসার্জারি মহল সূত্রের খবর, মস্তিষ্কের ও স্পাইনের বিভিন্ন ধরনের ক্যাথল্যাব ও সি-আর্ম নির্ভর অপারেশনের খরচ প্রাইভেটে প্রচুর— অনেক সময় সীমা-পরিসীমা ছাড়িয়ে যায়। কোনওটার সাত থেকে আট লক্ষ, কোনও অপারেশন আবার খরচ ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। সেদিক থেকে রোগীকে ‘আর্থিক মৃত্যু’র হাত থেকেও বাঁচাবে এই মেশিন।
সূত্রের খবর, মেশিনটি না থাকায় বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রেফারেল হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও দূর-দূরান্তের শয়ে শয়ে রোগীকে রেফার করা হচ্ছে অন্যান্য মেডিক্যালে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বারুইপুর, ডায়মন্ডহারবার, বাসন্তী, গোসাবা, ক্যানিং, পাথরপ্রতিমা, কুলতলি ও সুন্দরবন লাগোয়া বহু এলাকার অগুন্তি মানুষ।