বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে, তেমনি এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও। দেশের এ হেন অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন বলেছিলেন, সরকার খুব দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি একেবারে ধসে যাবে। আর এবার ভারতের বাজারের আকাশে মন্দার মেঘ দেখে মুখ খুললেন, নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার।
কোনও রাখঢাক না করেই তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘তীব্র নগদ সমস্যায় পড়েছে ভারতীয় অর্থনীতি। গত সত্তর বছরে এতো বড় সংকটে পড়েনি সরকার।’ রাজীব কুমার বলেন, ‘বাজার এমনই আন্দোলিত হয়ে রয়েছে যে কেউ কাউকেই বিশ্বাস করছে না। আস্থার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এমন নয় এটা শুধু সরকার ও বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে হয়েছে। প্রাইভেট সেক্টরেও একে অপরকে কোনও রকম ধার দিতে চাইছে না।’ তাই তাঁর মত, এ হেন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের দুটি পথ রয়েছে। এক, সরকারকে এমন কিছু পদক্ষেপ করতে হবে যাতে বাজার চাঙ্গা হয়। দুই, যে কোনও ভাবেই হোক বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে উদ্বেগ ও আশঙ্কা কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত পাঁচ বছরে মোদী জমানায় ধারাবাহিক ভাবেই দেশের অর্থনীতির ছবিটা খারাপ। প্রথমে নোটবন্দীর ধাক্কায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বড় ধাক্কা খেয়েছে। বাজারে নগদ কমে গিয়েছে। সঙ্কটে পড়েছে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা। তার পর পরই পণ্য পরিষেবা কর ব্যবস্থা চালু হওয়ায় বহু ব্যবসায়ীর মাথায় হাত পড়ে। এখন নতুন করে নগদের সমস্যায় আক্রান্ত অর্থনীতি। সরকারের পরিসংখ্যান থেকেই জানা যাচ্ছে, শিল্পে উৎপাদন অনেকটাই কমে গিয়েছে। এ বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রথম তিন মাসে গড় জাতীয় উৎপাদনও কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫.৮ শতাংশ। গাড়ি বিক্রি কমেছে প্রায় তিরিশ শতাংশ। একটি সমীক্ষার দাবি, শুধু গাড়ি শিল্পেই দশ লক্ষ কর্মী ছাঁটাই হতে পারে। এমনকী জনপ্রিয় বিস্কুট কোম্পানি পার্লেও ব্যবসা বাঁচাতে দশ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা জানিয়েছে।