বছর নয়েক আগের কথা। ২০১০ সালে পি চিদম্বরম তখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর অমিত শাহ গুজরাতের। সে সময়ই সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় শাহকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেই শাহই এখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর এবার চিদম্বরমকে গ্রেফতার করল সিবিআই। মিল আরও অনেক। দিল্লী হাইকোর্টের বিচারপতি সুনীল গৌর অবসর নেওয়ার তিন দিন আগে চিদম্বরমের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন। একই ভাবে ২০১০-এর জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি তরুণ চট্টোপাধ্যায় অবসরের ঠিক আগে সোহরাবুদ্দিন মামলায় সিবিআই তদন্তের অনুমতি দিয়েছিলেন।
সে সময় গাজিয়াবাদ জেলা আদালতের কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা বেআইনি ভাবে তুলে নেওয়ার অভিযোগের তদন্তে ওই বিচারপতির নাম জড়িয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি চট্টোপাধ্যায় কী ভাবে অবসরের মুখে সিবিআইয়ের পক্ষে রায় দেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি। এবার দিল্লী হাইকোর্ট থেকে অবসর নিলেন বিচারপতি সুনীল গৌর। নয় বছর পরে কংগ্রেস একই ভাবে প্রশ্ন তুলেছে, এই বিচারপতিই চিদম্বরমের আগাম জামিনের আবেদনের রায় জানুয়ারি মাস থেকে সংরক্ষিত রেখেছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সাত মাস পরে ঠিক অবসরের মুখে রায় ঘোষণা করলেন কেন?
এই বিচারপতিই ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া-রাহুল গান্ধীকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে রায় দিয়েছিলেন। সেই রায়ের শুরুতে তিনি বলেছিলেন, ‘এই মামলায় একটি কিংবদন্তি হয়ে যাওয়া জাতীয় রাজনৈতিক দলের সততা আতসকাচের নীচে রয়েছে।’ অবসরের পরে বিচারপতি গৌরকে কোনও পদ পাইয়ে দেওয়া হবে কি না, সেই জল্পনা তুঙ্গে। বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়ের অবসরের পরে তাঁকে সীমান্ত-বিবাদ সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আবার শাহর বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন সিবিআইয়ের এক তামিল অফিসার, ডিআইজি পি কন্ডসামি। চিদম্বরমের বিরুদ্ধেও তদন্তকারী অফিসার আর পার্থসারথিও তামিল। এই সমস্ত কিছু দেখেই ওয়াকিবহাল মহলের মত, ‘মেলাবেন তিনি মেলাবেন’।