লোকসভা নির্বাচনের আগে নদীয়া জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিলান্যাস করেছিলেন মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণ ভবনের। রানাঘাটের বীরনগর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন দিঘিরপাড়া এলাকায় তৈরি হয়েছে নতুন ভবন। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে এলে এই ভবন উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে।
বীরনগরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে এবং পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের অধীনে মৃৎশিল্প উন্নয়ন গুচ্ছ বা ক্লাস্টার প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এখানে প্রশিক্ষণ এর সঙ্গে যুক্ত বীরনগর পুরসভার ৩টি ওয়ার্ড এবং কালীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের রাধানগর, কামগাছি ও জয়পুরের মোট ৫৬৩টি পরিবার। পরিবারগুলির মৃৎশিল্পীরা বেশিরভাগই আর্থিকভাবে সচ্ছল নয়। এই পরিবারগুলিকে সার্ভের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এদের প্রশিক্ষণ ও তার সঙ্গে ভাতা দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখানকার মৃৎশিল্পীদের কাজের গুণগত মান বাড়ানোর জন্য সঠিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি কৌশিক পাল বলেন, এখানকার মৃৎশিল্পীরা অর্থনৈতিকভাবে অনেকটাই পিছিয়ে। কাজের সঠিক মূল্য না পাওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্ন পেশা নিয়ে তাঁরা চলে যাচ্ছেন। তবে এবার কমন প্রোডাকশন সেন্টার হওয়ায় অনেকের সুবিধা হবে। পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত ও বীরনগর পুরসভার চেয়ারম্যান পার্থকুমার চট্টোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় এই কাজ করা দ্রুত সম্ভব হয়েছে। বীরনগর পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ট্রেনিং সেন্টারের নির্মাণ প্রায় সম্পূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে সেটাকে উদ্বোধন করার চেষ্টা করছি আমরা। যে সমস্ত পাল সম্প্রদায়ের পুরুষ-মহিলা ট্রেনিং নিচ্ছেন, তাঁদের হাতে তৈরি মাটির জিনিসগুলি দেখার মতো হচ্ছে। তাঁদের হাতে তৈরি জিনিসের ভালো বাজার রয়েছে। অন্যদিকে, এই এলাকার রুইদাস সম্প্রদায়ের মানুষেরা ভালো বেতের কাজ করেন। তাঁদেরও আধুনিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এই ধরনের সেন্টার তৈরি করার চিন্তাভাবনা করা হয়েছে।
জেলায় প্রথম মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নতুন এই ভবনকে কমন প্রোডাকশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত করা হবে। দিঘিরপাড়া এলাকায় প্রায় এক বিঘা জমির উপর একটি নতুন ভবন তৈরি করার কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে নদীয়া জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী এই ভবনের শিলান্যাস করেন। প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে মৃৎশিল্পীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য এই ভবন তৈরি করা হয়েছে। যা এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়