অবশেষে জল্পনার অবসান। সারাদিন দিনভর নাটকের পর বুধবার রাতেই গ্রেফতার হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর গ্রেফতারির আশঙ্কা ছিলই। সেই মতো এ দিন রাতে চিদম্বরম প্রকাশ্যে আসার পরে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই ও ইডি অফিসাররা। দরজা না খোলায় দেওয়াল টপকে বাড়িতে ঢোকেন তাঁরা। এর পরেও নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত রাত পৌনে দশটা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
দরজা খোলেনি কেউ। তাই দেওয়াল টপকেই দিল্লিতে পি চিদম্বরমের বাড়িতে ঢোকেন সিবিআই অফিসাররা। দীর্ঘ ২৭ ঘণ্টা পর, বুধবার রাতে প্রকাশ্যে আসেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। আর তারপরই তাঁর বাড়িতে হাজির হন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। পৌঁছয় ইডির একটি দলও। অন্য দিকে, দিল্লীতে কংগ্রেসের সদর দফতরেও পৌঁছোয় গোয়েন্দাদের একটি দলও।
গতকাল দিল্লী হাইকোর্টে চিদম্বরমের জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যায়। সেই থেকে আর দেখা যায়নি পি চিদম্বরমকে। বাধ্য হয়েই তাঁর বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার পরেই এ দিন রাত সওয়া ৮টা নাগাদ দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে পৌঁছন চিদম্বরম। সেখানে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, গুলাম নবি আজাদ এবং কপিল সিবলের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। চিদম্বরম বলেন, ‘‘আমি পালিয়ে যাইনি। জামিনের আর্জির শুনানি চেয়েছিলাম মাত্র।’’
চিদম্বরমকে নিয়ে এ দিন দিন ভর রাজনৈতিক তরজা চলেছে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। আইনের হাত থেকে বাঁচতে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতারা। তা নিয়ে নাম না করেই শাসকদলকে একহাত নেন চিদম্বরম। তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতাই গণতন্ত্রের ভিত। সংবিধানের ২১তম ধারাতেও তার উল্লেখ রয়েছে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়েছে তাতে। দু’টোর মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বললে, স্বাধীনতাকেই বেছে নেব আমি। গত ২৪ ঘণ্টায় যা যা ঘটেছে, তাতে অনেকেই উদ্বিগ্ন এবং বিভ্রান্ত। আমি আইএনএক্স মামলায় অভিযুক্ত নই। অভিযুক্ত নন আমার পরিবারের কোনও সদস্য। এ নিয়ে আদালতে আমাদের কারও বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট জমা দেয়নি সিবিআই এবং ইডি। তাই আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে যতদূর হয় যাবো।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আইনের থেকে বাঁচতে আমি গা ঢাকা দিয়েছি বলে অভিযোগ তুলছেন অনেকে। এতে হতবাক আমি। জামিনের পিটিশন নিয়ে শুক্রবার শুনানি হওয়ার কথা। তাই আইনজীবীদের পরামর্শ নিতে ব্যস্ত ছিলাম। পক্ষপাতমূলক ভাবে তদন্তকারী সংস্থা যদি আইনের অপব্যবহার করে, তাও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকব আমি। সুপ্রিম কোর্টের রায় মাথা পেতে নেব।’’