বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে, তেমনি এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও। সবমিলিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ঘনীভূত মন্দার কালো মেঘ। যার প্রভাব পড়েছে গাড়ি বাজার থেকে বস্ত্রশিল্প সর্বত্রই। এমনকী আর্থিক মন্দার কবল থেকে ছাড় পায়নি দেশের বৃহত্তম বিস্কুট নির্মাণকারী সংস্থা পার্লে। ৯০ বছরের পুরনো এই সংস্থা এবার কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে। সংস্থার অন্দরের খবর, প্রায় ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে পারে পার্লে জি।
বর্তমানে পার্লে জি সংস্থার কর্মী সংখ্যা স্থানীয় ও অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষ। সংস্থার ক্যাটেগরি হেড মায়াঙ্ক শাহ জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরেই সংস্থার লাভের অঙ্ক প্রায় শূন্য। সার্কুলেশন কমেছে হু হু করে। যার ফলেই এই কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে সংস্থা। প্রথম দফায় ৮-১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই হতে পারে। সূত্রের খবর, অস্থায়ী ভিত্তিতে যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের ওপরেই ছাঁটাইয়ের কোপ পড়তে পারে বেশি। শাহের কথায়, ‘২০১৭ সালে জিএসটি লাগু হওয়ার পর থেকেই আর্থিক মন্দার মুখে পড়ে পার্লে। লোকসানের অঙ্ক বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই এক প্যাকেট বিস্কুটের দাম কম করে পাঁচ টাকা রাখতে হয়েছে। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে এই বেহাল অবস্থা কাটবে না।’
জানা গেছে, প্রত্যেক ১০০ কেজি বিস্কুটে ১২ শতাংশ হারে কর দিতে হত পার্লের মতো সংস্থাকে। এই সংস্থাগুলির আশা ছিল, অন্যান্য বিস্কুটে ১২ শতাংশ হারে জিএসটি লাগু হলেও, কম দামি ছোট বিস্কুট প্যাকেটের জন্য যেন ৫ শতাংশ জিএসটি ধার্য করা হয়। কিন্তু ২ বছর আগে বিজেপি সরকার জিএসটি চালু করার পর সব রকম বিস্কুটেই ১৮ শতাংশ কর চাপানো হয়। যার ফলে বিস্কুটের দাম বাড়াতে বাধ্য হয় পার্লে। গ্রামীণ ভারতে পার্লে কিন্তু দাম বাড়ার কারণেই গ্রামের দিকে এখন পার্লের চাহিদা অনেকটাই কমে গিয়েছে। ফলে উত্পাদন কমাতে বাধ্য হয়েছে তারা। ক্ষতি সামলাতে সরকার হস্তক্ষেপ না করলে কর্মী ছাঁটাই করতে তারা বাধ্য হবে বলেই জানিয়েছে এই বিস্কুট কোম্পানি।