লোকসভায় হলেও রাজ্যসভায় এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় শাসক জোট। কিন্তু গত মাসের শেষে তিন তালাক পাশ করানোর সময়েই বেরিয়ে এসেছিল বিরোধী ঐক্যের কঙ্কালসার চেহারাটি। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, বিরোধী শিবিরের এত নেতা উধাও কি ইডি-সিবিআইয়ের চাপে? এবার আর প্রশ্ন নয়। সরাসরি কংগ্রেসই অভিযোগ করছে, বিরোধী কণ্ঠকে পুরোপুরি স্তব্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছে মোদী সরকার।
কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা বলেন, ‘সব মামলা চলছে শুধু বিরোধীদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১২টাই হল কংগ্রেসের নেতাদের বিরুদ্ধে। আইন তো সকলের জন্য সমান হওয়া উচিত। তা সত্ত্বেও যাবতীয় মামলা শুধু বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধেই হচ্ছে কেন? বিজেপির সব নেতা কি ধোয়া তুলসীপাতা? আর বিরোধী দলের অনেক নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই ইডি-সিবিআইয়ের সব মামলা শেষ হয়ে যাচ্ছে!’
ন্যাশনাল হেরাল্ডের মামলায় সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অখিলেশ যাদবের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআই তদন্ত, মায়াবতীর ভাই আনন্দ কুমারের বেনামি সম্পত্তির তদন্ত, বিমান কেলেঙ্কারিতে শরদ পাওয়ারের ঘনিষ্ঠ প্রফুল্ল পটেলকে জিজ্ঞাসাবাদ, আইআরসিটিসি দুর্নীতিতে তেজস্বী যাদবকে জেরা, চন্দ্রবাবু নায়ডু, ফারুক আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতি— বিরোধী শিবিরের খুব কম দলই আছে, যারা মোদী সরকারের নিশানায় নেই।
সপ্তাহ খানেক আগে আটক হলেও জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে এখনও ছাড়া পাননি মুফতি-আবদুল্লারা। কমল নাথের ভাগ্নেও গ্রেফতার হয়েছেন। অথচ খনি এবং জমি দুর্নীতিতে বা জলবিদ্যুৎ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়ালও। দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত বল্লারীর রেড্ডি ভাইয়েরা বা অসমের হিমন্ত বিশ্বশর্মার ক্ষেত্রেও তদন্তকারী সংস্থাদের বিশেষ হেলদোল নেই।
এদিকে চিদম্বরমের পাশে দাঁড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা তাঁর টুইটারে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে জানান, ‘চিদম্বরমজির মতো যোগ্য ও রাজ্যসভার এক শ্রদ্ধেয় সদস্য কয়েক দশক ধরে অর্থমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আনুগত্য দিয়ে দেশের সেবা করেছেন। বিনা সঙ্কোচে সরকারের ব্যর্থতা ফাঁস করেন, সত্য বলেন। কিন্তু ভীতুদের কাছে সে সত্য অস্বস্তিকর। তাই তারা নির্লজ্জ ভাবে হানা দেয়। আমরা চিদম্বরমজির সঙ্গে আছি। পরিণতি যাই হোক, সত্যের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।’
রাহুলও টুইট করে বলেন, ‘মোদী সরকার ইডি, সিবিআই, ও মেরুদণ্ডহীন সংবাদমাধ্যমের একাংশকে ব্যবহার করে চিদম্বরমের চরিত্র হনন করছে। ক্ষমতার এই অপব্যবহারকে আমি কড়া নিন্দা করি।’ এনসিপির নেতা মজিদ মেমন এবং জেডিইউয়ের আলি আনোয়ারও এ নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। আবার খোদ বিজেপির শরিক দল শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরেও আজ রাজ ঠাকরের বিরুদ্ধে ইডি হানার সমালোচনা করেছেন।