ধারে ও ভারে এগিয়ে থেকেও শেষমেশ ম্যাচ জয় হল না লাল-হলুদ ব্রিগেডের। সেমিফাইনালে গোকুলামের কাছে হেরে ডুরান্ড থেকে ছিটকে গেল লাল-হলুদ। টাইব্রেকারে ইস্টবেঙ্গলের দুটি শট সেভ করেন গোকুলাম গোলরক্ষক উবেইদ। একটি শট পোস্টে লেগে ফেরে। ফলে ম্যাচ হেরে শতবর্ষের প্রথম ট্রফি মরীচিকা হয়েই থেকে গেল ইস্টবেঙ্গলের কাছে।
খেলার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদ ফরওয়ার্ড লাইনের একাধিক আক্রমণ প্রতিহত হয়ে যায় গোকুলাম গোলরক্ষক তথা ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী উবেইদের হাতে। কিন্তু ১৮ মিনিটের মাথায় প্রথমবার পর্যুদস্ত হতে হয়ে দীর্ঘদেহী এই গোলরক্ষককে। মাঝমাঠ থেকে একটা থ্রু বল একেবারে ডানদিকে ধরে বিদ্যাসাগর সিং সেন্টার রাখে বক্সে। কিন্তু সেই বল উবেইদের গায়ে লেগে বক্সেই রয়ে যায়। গোকুলাম ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করলে ডি বক্সের গজ দশেক দূরে বাঁ পায়ে রিসিভ করেই চকিতে ডান পায়ের ইনস্টেপ রাখেন সামাদ আলি মল্লিক। দ্বিতীয় পোস্টের কোণ দিয়ে বল জড়িয়ে যায় জালে।
প্রথমার্ধে আরও বেশ কয়েকটি ইতিবাচক আক্রমণ শানিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ৩৬ মিনিটের মাথায় একের বিরুদ্ধে এক পেয়েও গোকুলাম গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে পারেননি পিন্টু মাহাতো। না হলে তখন ব্যবধান বাড়িয়ে নিতেই পারত ইস্টবেঙ্গল। এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে লকার রুমে যায় শতবর্ষে পা দেওয়া এই ময়দানের ক্লাবটি।
দ্বিতীয়ার্ধেও শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সবাই যখন ধরে নিয়েছে ফাইনালে চলে গিয়েছে লাল-হলুদ, তখনই ঘটল বিপত্তি। গোকুলামের আক্রমণ থেকে বক্সের ভিতর বল পান হেনরি কিসিকা। তাঁকে টেনে ধরে ফেলে দেন ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডার মেহেতাব সিং। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। সঙ্গে পেনাল্টি পায় গোকুলাম। গোল করতে ভুল করেননি জোসেফ মার্কেস।
এরপর খেলা গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। আধঘন্টারও বেশি সময় ইস্টবেঙ্গলকে খেলতে হয় ১০ জনে। এই পর্বের তিরিশ মিনিটেও কোনও দল গোল করতে পারেনি। ফলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রথম শট মারে ইস্টবেঙ্গল। ডিকার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। অন্যদিকে গোকুলাম প্রথম শট জড়িয়ে দেয় জালে। ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় শট নেন কোলাডো। সেভ করে দেন উবেদ।
গোকুলামের দ্বিতীয় শট সেভ করে দেন ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক মিরশাদ মিচু। তিন নম্বর শটে প্রথম গোল করে ইস্টবেঙ্গল। গোকুলামের তৃতীয় শটও জালে জড়িয়ে যায়। চতুর্থ শটেও গোল করে ইস্টবেঙ্গল। গোকুলামও চার নম্বর শটে গোল করে ৩-২ গোলে এগিয়ে যায়। ইস্টবেঙ্গলের পঞ্চম অর্থাৎ শেষ শটও সেভ করে দেয় উবেদ। ফলে খেলার নিষ্পত্তি সেখানেই ঘটে। সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালে পৌঁছে যায় গোকুলাম।
(নিজস্ব চিত্র)