এবার সাধারণ বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ৫ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছেন৷ পরে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর ব্রিগেডের অন্যান্যরা এই টার্গেটের পক্ষে বারবার সওয়াল করেন৷ বাস্তবে এই বিপুল টার্গেটে পৌঁছানো সম্ভব কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ এইবার দেশে অর্থনৈতিক মন্দার পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রাক্তন আরবিআই গভর্নর রঘুরাম রাজন৷
আরবিআইয়ের প্রাক্তন দাওয়াই, দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করতে হবে৷ এর জন্য সংস্কারের প্রয়োজন৷ এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বেসরকারি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ আসে৷ তা না হলে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন তিনি৷ ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে কমে ৬.৮ শতাংশ৷ ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষ থেকে এটাই সবচেয়ে কম বৃদ্ধির হার৷
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক মনে করে, সরকার যে ৭ শতাংশ বৃদ্ধির টার্গেট রেখেছিল, তা আদৌ পূরণ হবে না৷ রাজনের আরও দাওয়াই, অর্থনীতি ও বৃদ্ধির হার চাঙ্গা করতে সংস্কারের একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিতে হবে৷ চরম সঙ্কটের মুখে দেশের গাড়ি শিল্প৷ গত ২০ বছরে এর আগে এই শিল্প এত সঙ্কটের মুখে পড়েনি৷ গত জুলাই মাসে এই যানবাহন বিক্রির সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, একটি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা জানিয়েছে, দেশের অটোমোবাইল শিল্প বর্তমানে এক গভীর সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে । সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স -এর প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, জুলাই মাসে গাড়ি ব্যবসায়ীদের কাছে যাত্রীবাহী যানবাহনের বিক্রি ৩০.৯ শতাংশ কমে ২০০,৭৯০ সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে। এর ফলে প্রায় ২.৩০ লাখ চাকরি হারিয়েছে৷ এর প্রভাব যে ভারতের অর্থনীতিতে পড়বে, তা বলাই যায়৷
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ধুঁকতে থাকা শিল্পকে চাঙ্গা করত প্রয়োজনে প্যাকেজ ঘোষণা করতে হবে সরকারকে৷ সেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বিনিয়োগ বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই বলে মনে করেন রাজন৷ তিনি মনে করেন, ইতিহাস কখনও পুনরায় ফিরে আসে না৷ তিনি মনে করেন, ২০০৮ সালের চেয়ে এবার অর্থনৈতিক ঝুঁকি (লেভারেজ)-এর সম্ভাবনা বেশি৷ তবে তা একই ক্ষেত্রে হবে না৷ ২০০৮ সালে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ছিল৷ এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে, একথা স্বীকার করেও সতর্ক করে দিয়েছেন রাজন৷ তবে তিনি কোনও অর্থনৈতিক ধসের ভবিষ্যদ্বাণী করছেন না৷