শেষমেশ চাপে পড়ে নেতাজির মৃত্যু নিয়ে টুইট প্রত্যাহার করল কেন্দ্রীয় সংস্থা প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বা পিআইবি। গতকাল সরকারি ভাবে সুভাষচন্দ্র বসুর ‘মৃত্যুদিন’ ঘোষণা করে পিআইবি। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয় বিভিন্ন মহলে। পিআইবি’র এই ঘোষণার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একটি টুইটে ঘুরিয়ে কেন্দ্রের এই বক্তব্যে বিরোধিতা করেন এবং তাইহোকু বিমানবন্দর থেকে নেতাজি নিখোঁজ হওয়ার পরের ঘটনা জানানোর আবেদন রাখেন।
রাজ্যের হাতে থাকা নেতাজি সংক্রান্ত বহু ফাইল প্রকাশ্যে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর নেতাজি রহস্য উন্মোচনে তিনি কেন্দ্রের কাছেও ফাইল প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন। রবিবার পিআইবি’র টুইটের পর মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেন, নেতাজিকে নিয়ে সমস্ত তথ্য প্রকাশ করুক কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, নেতাজির একটি ছবি ও তাঁর উক্তি ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও আমি তোমায় স্বাধীনতা দেব’ পোস্ট করে ১৮ অগস্টকে মৃত্যুদিন হিসাবে ঘোষণা করা হয়। প্রসঙ্গত ১৯৪৫ সালের ওই দিনেই তাইহকু বিমান দুর্ঘটনার মুখে পড়েন সুভাষচন্দ্র বসু। মনে করা হয়, ওই বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কোনও জোরালো প্রমাণ মেলেনি। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি মারা যাননি। যা নিয়ে পরবর্তীকালে একাধিক কমিশনও বসে।
তবে পিআইবি’র পর একই সুরে ১৮ ই অগাস্টকে নেতাজির মৃত্যুদিন হিসেবে ধরে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালাতে শুরু করেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। যদিও এ রাজ্যের নেতাজি ভক্তদের একটা অংশের দাবি, তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনার দিনকে নেতাজির তিরোধান দিবস হিসেবে ধরে নেওয়ার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা নেই। কারণ, তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তীব্র বিরোধিতা আসে বাংলার রাজনৈতিক দলগুলোর তরফেও। এমনকী নেতাজি পরিবারের সদস্য তথা বাংলায় বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়ানো চন্দ্র বসুও পিআইবি’র ট্যুইটের বিরোধিতা করেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের তরফ থেকে পিআইবির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়। এদিকে রবিবার পিআইবি’র তরফে ট্যুইটটি করা হলেও সোমবার সেই ট্যুইটের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, প্রবল চাপের মুখে বিতর্কিত ট্যুইটটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে পিআইবি কর্তৃপক্ষ।