যতদিন যাচ্ছে বিজেপি সরকারের শাসনে তটস্থ হয়ে উঠছে জনগন। শুধু দেশ নয়। রাজ্য ভিত্তিতেও সেই আবহাওয়া চলছে। দেশের অনেক রাজ্যের মত ত্রিপুরাতে রাজ করছে গেরুয়া সরকার। একবছর হল লাল দুর্গের ধ্বস করিয়ে গেরুয়া পতাকা উঠেছে ত্রিপুরার মসনদে। তবে এই একবছরেরই বিজেপির ‘সুশাসন’ই দুঃসহ হয়ে উঠেছে ত্রিপুরার মানুষদের কাছে। খোদ রাজধানী আগরতলাতেই সকাল–সন্ধ্যায় হাঁটতে যেতেই মহিলারা ভয় পাচ্ছেন। দিনে–দুপুরে ছিনতাই এখন নিত্যদিনের ঘটনা। শহরের বুকেই খুন হচ্ছেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। গোষ্ঠী সঙ্ঘর্ষের হাত থেকে নিস্তার নেই বিজেপি নেতাদেরও। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা স্বীকার করলেও মুখ্যমন্ত্রীর সাফাই ‘বখাটে’ ছেলেরা এইসব করছে।
উত্তর–পূর্ব ভারতের মধ্যে একমাত্র আগরতলাতেই অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকত দোকানপাট। কিন্তু বাম আমলের অবসানের পর রাম আমলে সেই আগরতলা শহরকেই গ্রাস করেছে আতঙ্ক। দিন দিন পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। শহরের জনবসতিপূর্ণ এলাকা রামনগরে প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে ছিনতাইবাজদের খপ্পরে পড়েন এক মহিলা। প্রাণে বাঁচলেও গলার হার ছিনতাই হয়। শনিবার শহরের একটি গহনার দোকান থেকে কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরার পথে শহরের প্রাণকেন্দ্রে মটরস্ট্যান্ড এলাকায় দিনের বেলাতেই অটো থেকে সেই গহনা নিয়ে চম্পট দেয় ছিনতাইবাজরা। শহরের বটতলা এলাকায় অটোয় করে বাড়ি ফেরার পথে সম্প্রতি ভরসন্ধ্যায় গণধর্ষণের শিকার হন এক তরুণী। আগরতলার বুকে ছুরিকাহত হন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়। শুক্রবারই শহরের প্রতাপগড় এলাকায় উদ্ধার হয় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দেহ। অতি সম্প্রতি খুন হয়েছেন বিজেপির এক নেতাও। গোষ্ঠী সঙ্ঘর্ষে বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুরও চলছে ত্রিপুরায়।
পুলিশের ওয়েবসাইটে স্পষ্ট, রাজ্যে অপরাধের হার কীভাবে বাড়ছে। চলতি বছর জুন মাসের পর আর আপডেট করা হয়নি তথ্য। সেই তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর মাত্র ৩৭ লাখ মানুষের ত্রিপুরা রাজ্যে খুনের সংখ্যা ১৬। অপহৃত হয়েছেন ৭৫ জন। আর ডাকাতির সংখ্যা ৬৭। অপরাধ বাড়ছে। মানছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ত্রিপুরা পুলিশেরই এক উচ্চপদস্থ অফিসার। তাঁর সাফকথা, মাঝে মহিলা নির্যাতনের ঘটনা কিছু কম হলেও এখন আবার সেটাও বাড়ছে।