৩৭০ ধারা বিলোপের পর প্রথমেই মুখ খুলে ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রবীণ সাংসদ তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা সাংবাদিকদের কাছে জানিয়েছিলেন, আমরা সবাই গৃহবন্দী। কারও কোথাও যাতায়াতের অনুমতি নেই। রাজ্যের প্রাক্তন আইএএস অফিসার তথা জম্মু-কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট পার্টির নেতা শাহ ফয়জলও জানিয়েছিলেন, “গোটা কাশ্মীর ’তালাবন্ধ’। রাজ্যের ৮০ লক্ষ মানুষই ‘বন্দী’।” এমনকী স্বাধীনতা দিবসে জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা জাভেদও অভিযোগ করেন, সারা দেশ যখন স্বাধীনতা দিবস পালন করছে, তখন কাশ্মীরিদের অবস্থা খাঁচায় বন্দী জন্তুর মতো। বাড়ির বাইরে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হচ্ছে যেন আমি অপরাধী। আমি নিজের জীবনের ভয় পাচ্ছি। উপত্যকার এমন পরিস্থিতি থেকেই স্পষ্ট, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়, গণতন্ত্রকে বিদ্রুপ করছে সরকার— সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ ও রাজ্য দ্বিখণ্ডিত করার সরকারি সিদ্ধান্তকে এ ভাষাতেই একজোট হয়ে নিন্দা করে এবার একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর করলেন দেশের ২০০ জন বিদ্বজ্জন।
ওই তালিকায় রয়েছে অমিতাভ ঘোষ, অমিত চৌধুরী, পেরুমল মুরুগান, টি এম কৃষ্ণন, পি সাইনাথের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী। তাঁদের সকলেরই দাবি, কাশ্মীরে গণতন্ত্র ফেরতে মানবাধির লঙ্ঘনকারী সমস্ত বন্দোবস্তগুলি প্রত্যাহার করুক সরকার। একই সঙ্গে তাঁরা চান, সরকার ৩৭০ অনুচ্ছেদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করুক। শুক্রবার একটি লিখিত বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার এবং তাকে দু’ভাগ করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তটি গণতন্ত্রকে উপহাস করছে। ১৯৪৭ সালে কাশ্মীরকে সংযুক্তকরণের সময় যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাও ভাঙা হল এর মধ্যে দিয়ে।’ সংসদে পেশ করা এই সংক্রান্ত বিল পাশের আগে কোনও মহলের পরামর্শ নেয়নি কেন্দ্র। কেন্দ্রের ওই মনোভাবের বিরোধীতা করে বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘কাশ্মীরে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনও ধর্ম, বর্ণের মানুষের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। অন্য রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজনের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়নি। এর থেকেই স্পষ্ট ভিন্নমত শোনার মতো সাহস নেই কেন্দ্রের।