কাটোয়া ১নং ব্লকের গোপখাজি গ্রামের বাসিন্দা মন্দিরা চক্রবর্তী৷ সঙ্গে থাকেন না স্বামী। সেলাই করে কোনওমতে দুই ছেলেকে নিয়ে দিন কাটে মন্দিরার। কাটোয়া ১নং ব্লকের গোপখাজি গ্রামে চিলতে ঝুপড়ির ঘরে। সেই একচিলতে ঘরের ফাঁকফোর ঢেকে রাখতেন ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি, ফেস্টুন ব্যানার দিয়েই৷ সেই দিদিকে বলেই হাল ফিরল মন্দিরার ঘরের৷
বড় ছেলে দিব্যেন্দু একটি দোকানে কাজ করে সামান্য রোজগার করছে এখন। স্কুল পড়ুয়া ছোট ছেলে দীপাংশু। ১৪ বছর আগে স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পরেই অভাবের সংসারে শুরু হয়েছিল দুই সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই। সেলাই এর কাজে অতি কষ্টে আধপেটা খাবার জোটে ঠিকই, তবে বহু পুরানো ঝুপড়ির ঘর মেরামত করা সামর্থ্যে হয়ে ওঠে না। শীত গ্রীষ্ম বাগে এলেও চরম ভোগান্তি বর্ষাকালে৷ ভাঙাচোরা ঝুপরির ঘর। ভাঙা চালের ফাঁক দিয়ে রোদ-বৃষ্টি দুইই অবারিত। রাতে বৃষ্টি নামলে রাস্তায় লাগানো মুখ্যমন্ত্রীর ফেস্টুন নিয়ে এসে ঘরের ফুটোফাটায় লাগিয়ে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করতেন। অল্প বৃষ্টিতে খানিক স্বস্তি মিললেও বেশি বৃষ্টিতে সুবিধা হত না বিশেষ। দোসরা অগস্ট আচমকাই ফোনে পেয়ে যান দিদিকে। আজ প্রশাসনের আধিকারিকরা এসেছিলেন মন্দিরা চক্রবর্তীর ভাঙাচোরা ঘরে। জানালেন দিদির নির্দেশে নতুন ঘর পাবে অসহায় পরিবার।
মন্দিরা জানান, রাস্তা ঘাটে পড়ে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো ফেস্টুনগুলি দেখতে পেলেই কুড়িয়ে এনে রাখতেন। কত রাতে অল্প বৃষ্টি থেকে তাঁদের বাঁচিয়েছে ওই ফেস্টুন। প্রতিবেশীদের মুখে শোনেন দিদিকে বলো কর্মসূচীতে কেউ সমস্যার কথা বললে, শোনেন দিদি।
গত ২রা অগস্ট কয়েক বারের চেষ্টায় ফোন পাওয়া যায়। তাঁর কথা শোনার পরেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়।তিনি বলেন, “১০ই আগস্ট কলকাতায় বাড়ির নথি সহ দেখা করি আধিকারিকদের সঙ্গে। আজ ব্লক থেকে আমার বাড়ি দেখতে ও আমার সাথে কথা বলতে অফিসাররা এসেছিলেন।”
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রঞ্জিত মণ্ডল বলেন, “অসহায় পরিবারটি দিদিকে বলো কর্মসূচিতে ফোন করার পরেই জেলা প্রশাসনের থেকে কাটোয়া ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়। সে কারণেই আজ ওই মহিলার বাড়ি পরিদর্শনে যাওয়া হয়েছিল। অসহায় পরিবারটিকে তাড়াতাড়ি নতুন পাকা ঘর বানিয়ে দেওয়া হবে। তাঁদের কর্ম সংস্থানের বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে।”