দিন দিন কমছে গৃহনির্মাণ কর্মীদের কাজ। কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি একটা সময় ছিল চাকরি সৃষ্টিকারী ইন্ডাস্ট্রি এবং গত কয়েক দশকে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কৃষি থেকে পালিয়ে এসে শ্রমিকরা যুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৯৯-২০০০ সালে এই ইন্ডাস্ট্রিতে ১ কোটি ৭০ লক্ষ শ্রমিক ছিলেন। ২০০৪-২০০৫ সালে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ২ কোটি ৬৫ লক্ষ-তে। এর পরে ২০১১-২০১২ সালে শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ কোটি ৩ লক্ষ-তে। এই সময়টাই ছিল সবচেয়ে ‘বুম’ পিরিয়ড।
অর্থনীতিবিদ সন্তোষ মেহরোত্রা বলেছেন, “ম্যানুয়াল আনস্কিলড শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে। এই শ্রমিকেরা কিন্তু কৃষি ক্ষেত্রে বীতশ্রদ্ধ হয়ে এই ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন। এঁদের আর অন্য কোথাও যাওয়ার ছিল না। এর আগে যাঁরা কৃষি কাজ ছেড়ে কনস্ট্রাকশনে এসেছিলেন, তাঁদের রোজগার বেড়েছিল এবং দারিদ্র্য দূর হয়েছিল। এখন নিয়মিত এবং ক্যাজুয়াল কর্মীদের ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক কমেছে”। কনস্ট্রাকশন এবং রিয়াল এস্টেট ইন্ডাস্ট্রিতে ডিমানিটাইজেশন প্রভাব ফেলেছে। প্রোজেক্টের সংখ্যা কমেছে। কাজ চলছে ধীর গতিতে। এর ফলে সেই সব শ্রমিক যাঁরা এক প্রোজেক্ট থেকে আর এক প্রোজেক্টে ঘুরে ঘুরে কাজ করেন তাঁদের পক্ষে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
সাম্প্রতিক ‘পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে’র মতে কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিতে গ্রোথ রেটে এসেছে ঘুড়ির গোত্তা খাওয়ার মতো নিম্নগামিতা। ২০১৭-২০১৮ পর্যন্ত কোনও ব-বৃদ্ধি তো হয়ইনি, বরং থমকে দাঁড়িয়েছিল। শ্রমিক সংখ্যা তখন ৫ কোটি ৪৩ লক্ষ। এই তথ্য দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ রবি শ্রীবাস্তব, যিনি এই ইন্ডাস্ট্রি সেক্টর নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন।
চার দশক কনস্ট্রাকশনের কাজ করেছেন ৬২ বছর বয়সী বাবু লাল। এই কনস্ট্রাকশন ব্যবসা সম্পর্কে তিনি সম্প্রতি একটি দার্শনিক মতামত দিয়েছেন। দ্বারকার রাজমিস্ত্রি বাবু লাল দিল্লিতে ১৯৮১ সাল থেকে কাজ করছেন। তাঁর মতে “এই ইন্ডাস্ট্রির ১৯৯০-তে ২০০০ পর্যন্ত ক্রমশই উপরে উঠেছে। কিন্তু তার পরেই নিম্নগামী। আগে কাজ অনেক বেশি ছিল, শ্রমিক কম ছিল। আজ শ্রমিক বেশি কিন্তু কাজ কম। বেকারি সর্বত্র। একটা সময় দারিদ্র্য আমাদের মতো অনেককেই এই পেশায় আসতে বাধ্য করেছিল”।