সমস্যায় পড়েছেন? কেউ আপনাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছে? তাহলে ‘দিদিকে বলো’। গোটা বাংলা জুড়ে এটাই এখন মুশকিল আসানের নয়া মন্ত্র। অনিল কপূর অভিনীত ‘নায়ক’ সিনেমায় যেমন যে কোনও অভাব-অভিযোগ নিয়ে ফোন আসত একদিনের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। আর সেই ফোন পেয়েই অকুস্থলে ছুটে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতেন তিনি। সম্প্রতি সেই কায়দাতেই রাজ্যবাসীর নানা সমস্যার সমাধান করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যলোচনা করতে গিয়ে নানা কারণের মধ্যে জনসংযোগের অভাবকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তৃণমূল নেত্রী। দলের বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ফলাফল পর্যলোচনায় তিনি সোজাসাপ্টা সেই ত্রুটির দিকে আঙুল তুলেছেন। অতঃপর তাঁর নির্দেশেই পেশাদারি রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থা প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাকও জনসংযাগের ওপরেই জোর দিয়েছে। সেই অনুসারে তৈরি হয় ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী। এই কর্মসূচী নিয়ে রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য দলের প্রতিটি সদস্যকে নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী।
সেই মতোই গত দুই সপ্তাহ ধরে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা দিদিকে বলো জনপ্রিয় করতে নিজেদের এলাকায় সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে যেতে শুরু করেছেন। নিজেদের অভাব অভিযোগ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য হেল্পলাইন নম্বর ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে ব্যস্ত নেতা থেকে মন্ত্রী পর্যন্ত সকলেই। ইতিমধ্যেই আইপ্যাকের পাঠানো তালিকা মেনে বিধায়ক-মন্ত্রীরা জনসংযোগে নিজেদের এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে পাত পেড়ে খাওয়াদাওয়া সারছেন। এবার সামনে এল সেই কাজের রিপোর্ট কার্ড।
প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গেছে, কম বেশী দলের সর্বস্তরের কর্মীরাই ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচী পালন করছে। সেই কাজের গতি আরও ত্বরান্বিত করতে এবার দলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে কাজের সময় ফেসবুক লাইভ করে দেখাতে হবে। অর্থাৎ জনসংযোগের ‘লাইভ’ আপডেট দিতে হবে নিজেদের ফেসবুক পেজে। উল্লেখ্য, আগামী ১০০ দিনে রাজ্যের সবকটি গ্রামে যাবেন তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতা-মন্ত্রীরা। সেখানে গিয়ে প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে দেখা করে দিদিকে বলো কর্মসূচীর বিষয়ে তাঁদের সচেতন করবেন তাঁরা। শুধু তাই নয়। সেখানেই বেশ কিছুদিন কাটাবেন ওই প্রতিনিধিরা। নৈশভোজন সারবেন দলীয় কর্মীদের বাড়িতেই।