স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে রাখীবন্ধন উৎসব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর স্বাধীনতার ৭৩ বছর পর সেই তাৎপর্য ফিরে এল। এই দুয়ের মধ্যে আপাত ভাবে কোনও মিল না থাকলেও স্বাধীনতা প্রাপ্তির আড়ালে থাকা দীর্ঘ সংগ্রামের সঙ্গে রাখী বন্ধনের এক গভীর যোগ রয়েছে। ১৯০৫-এর ১৯ জুলাই ব্রিটিশ ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গের প্রস্তাব ঘোষণা করলেন। আর তাতেই উত্তাল হয়ে উঠল দেশ। বাংলা ভাগ না করার প্রতিবাদে সারা দেশ জ্বলতে শুরু করে।
এই রকম পরিস্থিতিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখীকে উৎসব হিসেবের ভাবনা করে। ওই বছর ১৬ আগস্ট পড়েছিল রাখী পূর্ণিমা। ভাই-বোনের নয়, রাখীবন্ধন হয়ে উঠল হিন্দু-মুসলিমের সম্প্রীতি উৎসব। এ ধর্মের মানুষ ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে হাতে রাখি পরিয়ে দিচ্ছে যার হাতে, তার ধর্ম আলাদা। হাতে হাত রেখে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হল প্রতীকী প্রতিবাদ। একটা মানুষের ডাকে ধর্ম নির্বিশেষে সারা বাংলা এক হয়েছিল সে দিন। প্রতিবাদের ভাষা, চরিত্র বদলেছে ক্রমশ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া রাখী উৎসবকে আবারও ফিরিয়ে এনেছে বাংলার বর্তমান সরকার। সম্প্রীতি ও মৈত্রীর বার্তা নিয়ে কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মহা আড়ম্বরে পালন করা হয় রাখীবন্ধন উৎসব। একে অপরকে রাখি পরিয়ে মিষ্টি খাইয়ে তা পালিত হয়। বুধবার ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলের সামনে ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে পালিত হয় রাখি উৎসব।
জেলায় জেলায় বিভিন্ন ক্লাবপ্রাঙ্গণে, ওয়ার্ড অফিসের সামনে মঞ্চ করে আয়োজিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান। পরিবেশ সচেতনতা, জল অপচয় বন্ধ করার বার্তা দেওয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় স্কুল–কলেজের পড়ুয়ারা মেতে ওঠে রাখীবন্ধন উৎসবে। শুধু এই বছর নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে এই সম্প্রীতির বার্তা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে রাজ্যের বর্তমান তৃণমূল সরকার।