হংকংয়ের মূল শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে শেনঝেন শহরে মোতায়েন হয়েছে চিনা আধাসামরিক বাহিনী। অশান্ত হংকংয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংযত পথে এগোতে হবে বেজিংকে দেওয়া রাষ্ট্রপুঞ্জের এই হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও সেনা মোতায়েনে এক পা-ও পিছোয়নি চিন। ‘শেনঝেন বে স্পোর্টস সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বাইরে সার সার ট্যাঙ্ক দাঁড়িয়ে থাকার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যা দেখে অনেকেরই অনুমান, বড় ধরনের কোনও অভিযান শুরু হতে চলেছে। চিনা সংবাদ মাধ্যমে সেই ছবি প্রকাশ্যে এসেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংক্রান্ত হাইকমিশনার মিশেল বাচেলে বলছেন, “হংকংয়ের প্রতিবাদের সঙ্গে সন্ত্রাসকে মেলালে চিন কিন্তু পরিস্থিতিকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলবে”। হংকং হস্তান্তরের আগে ১৯৯৭-এ ব্রিটেনের গভর্নর ছিলেন যিনি, সেই ক্রিস প্যাটেনও বলেছেন, “সেনা নামালে চিন এবং হংকং— দু’জায়গাতেই বিপর্যয় নামবে”। হংকংয়ের বেজিংপন্থী নেত্রী ক্যারি ল্যাম আজ বলেন, টানা ১০ সপ্তাহ ধরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে যে জায়গায় পৌঁছেছে হংকং শহর, তাতে ফিরে তাকানোর পরিসর নেই।
আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান ল্যাম। পুলিশের বিক্ষোভ দমন নিয়ে আপত্তি করেন সাংবাদিকেরা। তাতে ল্যাম বলেন, “পরিস্থিতি বুঝে তাৎক্ষণিক ভাবে নানা সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। তবু চেষ্টা করা হচ্ছে বাহিনীর ব্যবহার যতটা কম করা যায়”। ল্যামের কথায় অবশ্য শান্ত হননি সাংবাদিকরা। তাঁরা পাল্টা প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘বিবেক বলে কি আপনার কিছু আছে?’’ ক্ষুব্ধ আর এক জন বলে ওঠেন, “বহু নাগরিক জানতে চাইছেন, আপনি কবে মারা যাবেন?” ল্যাম বলে যান, “হিংসা থামানো গেলেই এই অশান্ত পরিস্থিতি শেষ হবে। আমি হংকংয়ের প্রধান হিসেবে দেশের অর্থনীতি পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব নিচ্ছি”।
চিনা সংবাদপত্রের দাবি, ‘বিদ্রোহ, দাঙ্গা, জঙ্গি হামলায় সশস্ত্র পুলিশের ব্যবহার আইনেই রয়েছে।’ কাল থেকেই বেজিং বলতে শুরু করেছে, হংকংয়ের প্রতিবাদের মধ্যে সন্ত্রাসের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর আগেও বিভিন্ন অহিংস বিক্ষোভে সন্ত্রাসের প্রভাব খুঁজে পাওয়ার ‘যুক্তি’ দেখিয়ে সামরিক সক্রিয়তা বাড়িয়েছে চিন। তিব্বত এবং শিনজিয়াংয়ের মতো ছোট ছোট অঞ্চলই তার প্রমাণ।