একই অঙ্গে কত রূপ!
তিনি এদিকেও আছেন ওদিকেও আছেন। কখনও তাঁর শরীরে বয় রানী পদ্মিনীর রক্ত আবার কখনও তিনি রামের বংশধর। তিনি দিয়া কুমারী। রাজস্থানের রাজসামানদের বিজেপি সাংসদ। কিছুদিন আগে দিয়া কুমারী দাবি করেছিলেন, তাঁর পরিবার রামের ছেলে কুশের বংশোদ্ভূত। মানে তিনি রামের বংশধর। তিনি বলেছিলেন, “হ্যাঁ, ভগবান রামের বংশধররা আমাদের পরিবার সহ তাঁর পুত্র কুশের বংশোদ্ভূত পরিবার সহ সারা বিশ্ব জুড়ে আছেন”। অন্যদিকে, সঞ্জয় লীলা ভনসালী পরিচালিত ‘পদ্মাবত’ ছবি নিয়ে দেশ জুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। তখন দিব্যা কুমারী দাবি করেন যে, তিনি রানী পদ্মিনীর বংশধর। এবং রানী পদ্মিনীকে অন্যরকম ভাবে প্রেজেন্ট করা হয়েছে। তাই জয়পুরে বেড়েছিল এই চলচ্চিত্রের প্রতি ক্ষোভ। সিনেমাটির মুক্তিতে স্থগিতের দাবি করেছিলেন। পদ্মাবতীর বংশধর এম কে বিশ্বরাজ সিং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন, যাতে ছবিটির শংসাপত্র ও মুক্তি দাবি করা হয়। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে, চলচ্চিত্র প্রত্যয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রসূন জোশী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং প্রকাশ জাভাদেকরকেও সম্বোধন করা হয়েছিল।
বিজেপি সাংসদ একদিকে রামের বংশধর পাশাপাশি রানী পদ্মিনীর বংশধর কিভাবে হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নেটিজেনদের মধ্যে কেউ কেউ এই ঘটনা নিয়ে নিজেদের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘একই সংগে রামের ও রানী পদ্মিনির বংশধর কিভাবে হওয়া যায়’। দিব্যা কুমারীর বক্তব্যে কোনো সামঞ্জস্য পাওয়া যাচ্ছে না।
পাঁচ বিচারকের সংবিধান বেঞ্চের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গৈগেই মসজিদ-রাম জন্মভূমির মামলায় হিন্দু দেবতা রামের প্রতিনিধিত্বকারী প্রবীণ আইনজীবী কে পরাসরণকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, যদি রামের বংশধর কেউ এখনও অযোধ্যাতে অবস্থান করছেন। তিন ব্যক্তি দাবি করেছেন যে তাদের পরিবার হিন্দু দেবতা থেকে এসেছিল। হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার পূর্ব মেওয়ার রাজপরিবারের লক্ষ্যরাজ সিংহ দাবি করেছিলেন যে তাঁর পরিবার রামের পুত্র লবের বংশোদ্ভূত। তিনি বলেছিলেন যে লভকোট বা বর্তমান লাহোর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তার বংশধররা সিসোদিয়া রাজবংশ প্রতিষ্ঠার জন্য আহাদে, যা এখন মেওয়ারে অবস্থিত।
এর আগে দিব্যা কুমারী দাবি করেছিলেন, “এই চলচ্চিত্রটি দিয়ে তারা আমার পরিবারের নাম এবং ইতিহাস যথাযথ করার চেষ্টা করেছে এবং তাদের বাণিজ্যিক লাভের জন্য এটি ব্যবহার করবে। আমার পূর্বপুরুষদের শ্রদ্ধেয় নামগুলিকে এ জাতীয় মানের হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পাত্রবিলারে টেনে আনা হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে এটি ঘৃণার বিষয় ”।
চলচ্চিত্র পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভনসালীর আশ্বাস দিয়েছিলেন, যে ছবিটি এমন কোনও চিত্রায়িত করে না যা অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে রাজপুত সম্প্রদায়ের আশঙ্কা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে।