ভাষার জন্য লড়াই করতে গিয়ে এককালে শহীদ হয়েছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউররা। এখনও বাংলার বঞ্চনা দেখলেই বারবার গর্জে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এরপরও সদ্য আরও বেশি করে আমদানি হওয়া ‘হিন্দি সংস্কৃতি’র ঠেলায় বাঙালি কি বাংলাতেই ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে? অন্তত ভাষার নিরিখে? মাঝেমধ্যেই প্রশ্নটা উঠছে নেটদুনিয়া থেকে পথেঘাট- সর্বত্র। বস্তুত সরকারি হোক বা বেসরকারি- বহু জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলা ভাষা অবাঞ্ছিত থেকে যাচ্ছে। তবে এইজন্যে এবার দানা বাঁধছে আন্দোলনও। আর সেই আন্দোলনে অনেক সময়ই উঠে আসছে ‘বাংলা পক্ষ’ নামে একটি সংগঠনের নাম। যারা এর আগেও নানা জায়গায় বাংলা ভাষা নিয়ে সরব হয়েছে।
এবার যেমন বাংলার দিকে দিকে বাসে-ট্রেনে ছড়িয়ে পড়েছে বেশ কিছু পোস্টার। যেখানে সবই বাংলা ভাষার দাবিতে আর হিন্দির আগ্রাসন রুখতে। হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা বলে চালিয়ে দেওয়ার যে প্রবণতা রয়েছে বহু জায়গায়, সেই মিথ্যেরও বিরোধীতা করা হয়েছে পোস্টারগুলিতে। কোনও পোস্টারে লেখা রয়েছে, ‘বাংলায় থাকার প্রথম শর্ত বাংলা শিখুন’, কোনওটায় আবার ‘হিন্দি আমাদের রাষ্ট্রভাষা নয়’। একটাতে আবার এ-ও লেখা ‘বাংলাকে সম্মান করুন, নাহলে বাংলা ছাড়ুন।’ লেখা আছে, ‘হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া বন্ধ হোক।’ তবে কোথাও ‘বাংলা পক্ষ’র নাম না থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের প্রতিনিধিদের তৎপরতা বলে দিচ্ছে এগুলোর সঙ্গে তাঁদেরও যোগ রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতেও পোস্টারগুলি বিপুল প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেকেই দাবিগুলির সঙ্গে সহমত পোষন করেছেন। উল্লেখ্য, এর আগে স্টেট ব্যাঙ্কের বাগডোগরা শাখায় বাংলা পক্ষে এক সদস্য জানতে চান, বাংলায় যখন পরিষেবা দিতে চান, তখন ব্যাঙ্কের ফর্ম বাংলাতে নেই কেন? শুধু ইংরেজি ও হিন্দি কেন? সেই নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রীতিমতো বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায় তাঁর। শেষমেশ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার এই প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হন যে, বাংলায় ফর্ম অবশ্যই হওয়া উচিত। এ বিষয়ে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব বাংলায় ফর্মের ব্যবস্থা করবেন।’