শহরের বুকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাই যেন অপরাধের ‘সফট টার্গেট’। গত কয়েকদিনে খুন হয়েছেন বেশ কয়েকজন বয়স্ক মানুষ। কর্মসূত্রে বা বিবাহসূত্রে ছেলেমেয়েরা অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার ফলে সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতে হয় প্রবীণদের। যার জেরেই বাড়ছে অপরাধ। তাই এবার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সুরক্ষা দিতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে এল কলকাতা পুলিশ। মেয়রের ‘১৫ দফা কর্মসূচী’ নাম দিয়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সার্কুলার জারি করা হয়েছে৷ পুর কমিশনার খালিল আহমেদ কোন সিদ্ধান্ত কোন দফতর কার্যকর করবে তাও উল্লেখ করেছেন সার্কুলারে৷
কলকাতা পুরসভার কর্মসূচীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, সম্পত্তি করের ওপর ১০ শতাংশ ছাড়৷ কার পার্কিংয়ে অগ্রাধিকার ও বিশেষ ছাড়৷ লাইসেন্স ফি তে ছাড়৷ নিখরচায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা৷ পার্কে প্রবীণরা যাতে অবাধে বসে সময় কাটাতে পারেন, তার জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা৷ এব্যাপারে পিছিয়ে নেই কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ দমদম পুরসভা৷ তারা কলকাতা পুরসভার পথ অনুসরণ করতে চলেছে৷ শনিবার তারাও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জমি বাড়ির করের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে ষাটোর্ধ্ব নাগরিকদের৷ তাদের একাধিক সিদ্ধান্তের মধ্যে উল্লেখযোগ্য– বড় পুজো কমিটিগুলোকে বলা হবে বয়স্কদের ঠাকুর দেখানোর বিশেষ ব্যবস্থা করতে৷ পুরসভার হাসপাতালে প্রবীণদের বেড সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা করছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা৷
কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘অবসর গ্রহণের পর শহরে এমন অনেক প্রবীণ আছেন, যাঁরা শুধু আর্থিকভাবে নয়, হাসপাতাল থেকে পার্কে গিয়েও সমস্যায় পড়েন৷ এই সব প্রবীণরা যাতে সুস্থভাবে অবসর কাটাতে পারেন, তার জন্য তৎপর পুরসভা’৷ দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পাচু রায় বলেন, ‘প্রবীণরা বোঝা নন, তাঁদের সুস্থভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে’৷ শহরে প্রবীণদের স্বার্থে কলকাতা পুরসভার উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ৷ কারণ পরপর খুনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল৷
শহরে সম্প্রতি প্রবীণদের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷ সদ্য ঘটে যাওয়া ৩টি খুনের ঘটনা ঘটেছে এই শহরের বুকে৷ এই নিয়ে চিন্তায় ছিল কলকাতা পুরসভা৷ সূত্রের খবর, মেয়র ফিরহাদ হাকিম কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, স্মার্ট সিটি প্রকল্পের অধীনে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে টাকা দেবে কলকাতা পুরসভা৷ ২ পুরসভার এই উদ্যোগ স্বাগত জানিয়েছেন সাহিত্যিক র্শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায় এটা শুভ উদ্যোগ৷ নাট্যব্যক্তিত্ব দেবশঙ্কর হালদার মনে করেন, কলকাতা পুরসভার পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে পরিবহণ দফতর ও মেট্রো কর্তৃপক্ষকে৷ প্রবীণদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে৷