ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ককে টপকে গেলেন বর্তমান অধিনায়ক। ওয়ান ডে-তে রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে পিছনে ফেলে বিরাট কোহলি উঠে এলেন অষ্টম স্থানে। ওয়ান ডে-তে ৪২তম সেঞ্চুরি করার পরে পিঠে তিন বার চাপড় মারলেন বিরাট কোহালি। সঙ্গে তাঁর উচ্ছ্বসিত লাফ। বিরাটের পরিচিত উৎসবের ভঙ্গি শেষ পাঁচ মাস উপভোগ করতে পারেননি ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকেরা। বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি পাননি। টি-টোয়েন্টিতেও সেই সুযোগ হারিয়েছেন। ওয়ান ডে সিরিজে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় আরও দু’দিন কোহালি সমর্থকদের অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু পোর্ট অব স্পেনে অধিনায়ক ফিরলেন তাঁর প্রিয় মেজাজে। ১২৫ বলে তিনি করলেন ১২০ রান। ১৪টি চার ও একটি ছয়ের সৌজন্যে। ৫০ ওভার শেষে সাত উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ২৭৯।
শুরু থেকেই তাঁর ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল, বড় ইনিংস খেলার স্বপ্ন নিয়ে নেমেছেন। প্রথম ওভারেই শেলডন কটরেলের ছোট ইনসুংইয়ে পরাস্ত হয়ে ফিরতে হয় শিখর ধওয়নকে (২)। তখন ভারতের স্কোর ২-১। খেলার বয়স তিন বল। তখনই তিন নম্বরে নামা ব্যাটসম্যানের আসল পরীক্ষা। ওপেনারের ব্যর্থতা ঢাকতে বিরাটকেই মূল দায়িত্ব নিতে হত। কোহলি বরাবরই সেই দায়িত্ব নিতে পছন্দ করেন। এ দিন কেমার রোচকে কভার ড্রাইভে স্বাগত জানিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, আরও এক বার সেই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
এগারো ইনিংস পরে ওয়ান ডে-তে সেঞ্চুরি এল কোহলির ব্যাটে। চলতি বছরের মার্চ মাসে রাঁচীতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন কোহলি। তার পর এল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ভারতের ইনিংস চলাকালীন শুরু হয় বৃষ্টি। প্রথম ওয়ান ডে-তে আবহাওয়াই কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতের সামনে। এ ম্যাচেও সেই আতঙ্ক ফিরে আসে। সেই বিরতিতে কোহালির ইনিংসের প্রশংসা করে গেলেন সুনীল গাভাসকর। ‘লিটল মাস্টার’ বললেন, ‘‘ওয়ান ডে-র আদর্শ ব্যাটিং দেখলাম আজ। উইকেটের সব দিকে রান করেছে বিরাট। প্রায় ওপেনারের ভূমিকাই পালন করতে হয়েছে ওকে। শুরু থেকে উইকেটের সোজাসুজি খেলার প্রবণতা কত বড় আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে তা বিরাটের ইনিংস দেখলেই বোঝা যায়।’’
কোহলির এই কৃতিত্বের পরে রাতে সৌরভ নিজেই টুইট করেন। তিনি লেখেন, ‘‘ওয়ান ডে-তে আরও একটি অসাধারণ ইনিংস উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ বিরাট। সত্যি অপূর্ব।’’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন ফাস্ট বোলার ইয়ান বিশপও মুগ্ধ কোহলির এই ইনিংসে। তিনি টুইট করেন, ‘‘পাঁচটার বেশি হাফ সেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে, অথচ সেঞ্চুরি হয়নি, এ রকম পরিস্থিতি কোহলির জীবনে আগে আসেনি। এই ম্যাচে সে রকম একটা হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। যদি সেঞ্চুরির আগে ফিরে যেত বিরাট। কিন্তু ওর ইনিংস দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, ৪২তম সেঞ্চুরিটা অবশ্যম্ভাবী। আধুনিক ওয়ান ডে ক্রিকেটের মাস্টারকে ব্যাট করতে দেখাটাও একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার।’’