মহারাষ্ট্র ভেসে যাচ্ছে বন্যায়। হাহাকার সর্বত্র। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারই উদ্ধার করবে সাধারণ মানুষকে। এটাই কর্তব্য। আর তা করতে গিয়ে বারবার বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। সেলফি বিতর্ক ভুলতে না ভুলতেই আবার আর একটি বিতর্কে নাম লেখাল পদ্ম শিবির। ত্রাণসামগ্রীর প্যাকেটে মুখ্যমন্ত্রী ও বিধায়কের ছবি দেওয়া স্টিকার লাগিয়ে বিতর্কে জড়াল মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার। বন্যা বিধ্বস্ত কোলাপুর এবং সাংগলিতে ওই ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই প্যাকেটগুলির একদিকে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস ও অন্যদিকে রয়েছে মহারাষ্ট্রের ইছলকরনজি বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক সুরেশ হালভানকার ছবি। যা নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, শনিবার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে প্রথম টুইট করেন এনসিপি নেতা ধনঞ্জয় মুন্ডে। তার ফলে নেটদুনিয়ায় প্রবল সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় রাজ্যের শাসকদল বিজেপিকে। ত্রাণসামগ্রীর প্যাকেটের ছবি দিয়ে মুন্ডে টুইট করেন, ‘সরকার কিসে অগ্রাধিকার দিচ্ছে? স্টিকার ছাপানোয়! এইজন্যই কি গত দু’দিন বন্যা দুর্গতদের কাছে কোনও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছনো হয়নি। যাতে স্টিকার ছাপানোর সময় পাওয়া যায় ? আসলে এই ধরনের লোকেরা স্টিকারে নিজেদের ছবি ছাপাতে দেরি করেন না। এই দেখনদারি মনোভাবের জন্য আপনারা মানুষকে না খাইয়েই মেরে ফেলবেন।’
শুধু তিনি নন। বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন এনসিপির মুখপাত্র নবাব মালিকও। বলেন, ‘ভদ্রতার সমস্ত সীমা লঙ্ঘন করেছে বিজেপি। ওরা এতটাই নিলজ্জ ও স্বার্থপর হয়ে পড়েছে যে বন্যাদুর্গত মানুষদের সঙ্গে নিষ্ঠুর রসিকতা করতেও পিছপা হচ্ছে না।’ স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ঘটনার কথা জানতে পেরে সরব হয়েছেন মহারাষ্ট্র-সহ গোটা দেশের মানুষ। প্রশ্ন তুলেছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় নিজেদের প্রচার না করলেই কি চলছিল না ওদের। নাকি ভোট আসার আগে মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য বন্যার সময়কেই ব্যবহার করতে চাইছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণের কাজে গিয়ে সেলফি তুলেছিলেন ফড়ণবিস সরকারের জলসম্পদমন্ত্রী গিরীশ মহাজন। তা নিয়ে বিতর্ক এখনও চলছে। তার মধ্যেই এই খবর সামনে আসতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে সরকার। বন্যাকবলিত মানুষদের নিয়ে এইভাবে রাজনীতি, প্রচারকে একেবারেই ভালো চোখে দেখছেন না ওয়াকিবহাল মহল। বিরোধী থেকে সাধারণ মানুষ সব স্তরেই উঠেছে নিন্দার ঝড়।