প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়কে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নীতি আধিকারিক ডি কে জৈনের নোটিস পাঠানো নিয়ে তোলপাড় ক্রিকেটমহলে। তা নিয়ে মুখ খুললেন জাতীয় দলে দ্রাবিড়ের প্রাক্তন সতীর্থ অনিল কুম্বলে। তিনি বললেন, “সমস্ত পেশাতেই স্বার্থের সংঘাত রয়েছে”৷
তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর রাহুল দ্রাবিড়কেও স্বার্থের সংঘাত প্রসঙ্গে নেটিশ ধরিয়েছে বোর্ডের এথিক্স অফিসার বিচারপতি ডিকে জৈন৷ দ্রাবিড়ের এক সময়ের সতীর্থ কুম্বলে যা নিয়ে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, ‘আমার মনে হয়, সমস্ত পেশাতেই স্বার্থের সংঘাত রয়েছে। এটা বোধহয় জীবনেরই অঙ্গ। কী ভাবে এটা নিয়ে এগোনো উচিত, কী ভাবে কার সঙ্গে কতটা গভীর ভাবে জড়িয়ে রয়েছে কেউ, সেটা তুলে ধরা খুব কঠিন কাজ। আর লোকে যখন এটা জেনেই যায়, একটা কিছুর সঙ্গে কেউ জড়িয়ে আছে, তখন আর কোনও সংঘাত থাকে না।’
দ্রাবিড় ইন্ডিয়া সিমেন্টসের কর্মী। যে সংস্থা আবার আইপিএলের চেন্নাই সুপার কিংসের মালিক। দ্রাবিড় পাশাপাশি জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির হেড কোচ। যে কারণে স্বার্থের সংঘাত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
দ্রাবিড়ের পাশে দাঁড়িয়ে কুম্বলের সোজা বক্তব্য হল, ‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্য যে, সমস্ত ক্রিকেটারই এখন স্বার্থের সংঘাত ইস্যুতে জড়িয়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে এটাও দূর্ভাগ্যের যে, তাদের মধ্যে খুব কম ক্রিকেটারই ক্রিকেটের সেবা করার সুযোগ পায়। তার কারণ, খুব কম ক্রিকেটারই ভারতের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছে।’
গোয়াতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ভারতের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন ও কোচ কুম্বলের মন্তব্য, ‘দেশের হয়ে খেলা ৩০০ ক্রিকেটারের অর্ধেক এখনও বেঁচে আছে। এই দেড়শো ক্রিকেটারই ক্রিকেটকে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। যদি আপনি না চান যে, এরা ক্রিকেটের সেবা করুক, তা হলে অন্য কাউকে খুঁজে বের করতে হবে।’ আসলে কুম্বলে পরিষ্কার করে দিতে চেয়েছেন যে, প্রথম সারির এই ক্রিকেটারদের, যাঁরা স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়ে, তাঁদের ক্রিকেট থেকে সরিয়ে দিলে ক্ষতি হবে ক্রিকেটেরই।
ক্রিকেটমহলের অধিকাংশের মতে, স্বার্থের সংঘাতের মীমাংসা করা বোর্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। আর কুম্বলে যে ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, তাতে আরও পরিষ্কার হয়ে গেল, শুধু ক্রিকেটই নয়, সমস্ত পেশাতেই রয়েছে স্বার্থের সংঘাত।
এ দিকে, ২০১৬ সালে ভারতে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কর ছাড় না পেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের কাছে ভারতীয় বোর্ড যে বার্ষিক লভ্যাংশ পায় তাতে কোপ পড়বে। এ ভাবেই শশাঙ্ক মনোহরের নেতৃত্বে আইসিসি সতর্ক করল ভারতীয় বোর্ডকে। যাতে ক্ষুব্ধ ভারতীয় বোর্ড কর্তারা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন সেই সময়ে বোর্ডের অন্যতম শীর্ষকর্তা হিসেবে ছিলেন মনোহরই। এখন তিনি বোর্ডের থেকে কী ভাবে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তাঁর ভূমিকায় খুশি নন বোর্ড কর্তারা।