বাংলার পথ ভুলেছে বর্ষা। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বর্ষার সময় এলেও সেইভাবে বৃষ্টির দেখা নেই। আর এই বর্ষার ঘাটতির ফলে বিরাট ক্ষতির মুখে চাষীরা। বৃষ্টির অভাবে রাজ্যে খারিফ চাষ প্রায় থমকে গিয়েছে। ধান রোয়ার জন্য ন্যূনতম যে-পরিমাণ জলের দরকার, অনেক জেলায় তার চেয়ে কম জল রয়েছে বলে কৃষি দফতরের খবর। এই অবস্থায় আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টি না-হলে চাষিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না-হন, সেই জন্য রাজ্য জুড়ে শস্যবীমা যোজনায় জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কৃষি দফতর। এবার সমস্ত কৃষকের বিনামূল্যে শস্যবীমার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার।
শুক্রবার বাঁকুড়া সার্কিট হাউসে চাষের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে এক পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত হয়ে এই বিনামূল্যে শস্যবীমার কথা বলেন রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, এই শস্যবীমা যোজনার আওতায় যাতে সর্বাধিক কৃষক আসতে পারেন সে ব্যাপারে ইতিমধ্যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় চাষের কাজ এক দিকে যেমন ব্যহত হয়েছে, তেমনি জলাধার গুলিও ভরে ওঠেনি। তার মধ্যেও সেচ দপ্তর রাজ্যের কংসাবতী, ডিভিসি, ময়ুরাক্ষী জলাধার থেকে জল ছেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের তরফে বিকল্প চাষের ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে জানিয়েছেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, উত্তরবঙ্গে যেমন হাইব্রিড ভুট্টা চাষ হচ্ছে, তেমনই এই জেলায় তেল ও ডাল শস্য চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবছর জেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে কৃষি মন্ত্রী বলেন, চাষীরা বলছেন আগষ্ট মাস পর্যন্ত পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছন সম্ভব। চাষীদের আশ্বস্ত করে এদিন আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, কোথাও ধানের বীজ তলা জলের অভাবে নষ্ট হয়ে গেলে সরকারী কৃষি খামারে তৈরী বীজ তলা যাতে সরবরাহ করা যায় সেবিষয়ে ভাবনা চিন্তা রয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী আশিসবাবু বলেন, ‘‘৫ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে বৃষ্টি হয়েছে ৬২৪.৪ মিলিমিটার। যা গত বছরের এই সময়ের বর্ষণের প্রায় অর্ধেক। বৃষ্টির ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। আমরা চাষিদের জল দিতে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন জলাধার থেকে জল দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’’