বিধানসভা ভোটের আগেই বদলে যেতে পারে রাজ্যের সচিবালয়ের ঠিকানা। আবার তা ফিরতে পারে ঐতিহ্যশালী রাইটার্স বিল্ডিংয়ে। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরেই মহাকরণের সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন থেকে ফের ঐতিহাসিক রাইটার্স বিল্ডিং-এর স্থানান্তরিত হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।
২০১১ সালে রাজ্যের মসনদ থেকে বামেদের সরিয়ে রাইটার্স বিল্ডিং দখল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৩-তে রাজ্যের সচিবালয় মহাকরণ থেকে হুগলি নদীর অন্য পাড়ে নবান্নে স্থানান্তরিত করা হয়। রাইটার্স বিল্ডিং-এর সংস্কারের কথা ঘোষণা করে সচিবালয় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ই মমতা জানিয়েছিলেন সংস্কারের কাজ শেষ হলে ফের সচিবালয় সেখানেই ফিরিয়ে আনা হবে। এবার সত্যি হতে চলেছে সেই কথাই। জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ।
জানা গেছে আগামী ছয় মাসের মধ্যে মহাকরণ সংস্কার শেষ করতে হবে। এরপরেই নতুন উদ্যমে কাজ শুরু হয়েছে। বিগত কয়েক সপ্তাহে পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। এতদিন রাইটার্সকে আগের রূপে ফিরিয়ে দিতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যেসব ব্লক সংযোজিত হয়েছিল তা ভেঙে ফেলার কাজ চলছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই কাজ শেষ করা হয়েছে। হেরিটেজ কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রেখে নতুন করে রূপটানের কাজ শুরু হয়েছে শতাব্দী প্রাচীন এই ভবনের। মহাকরণ সংস্কারের পরিকল্পনা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের হাতে। তারা নকশা তৈরি করে ২০১৫ সালেই পূর্ত দফতরের কাছে জমা দেন। ওই পরিকল্পনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় ইঞ্জিনিয়ার এবং স্থাপত্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বৈঠক চলেছে। যাদবপুরের স্থপতিদের করা নকশা অনুযায়ী, সৌন্দর্যায়িত রাইটার্স বিল্ডিং এ বিভিন্ন ব্লকের মাঝখানের অংশে চওড়া লন, বড় ফুলের বাগান, নয়নাভিরাম ফোয়ারা বসানো হবে। নিচের তলার একাংশে রাইটার্স বিল্ডিং ও স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে একটি স্মারক মিউজিয়াম তৈরির পরিকল্পনা আছে। দোতলা তিনতলা মিলিয়ে তৈরি হবে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর। এছাড়া আলাদা বৈঠক, অধিবেশনের জন্য আলাদা আলাদা ঘর থাকবে।
পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেল ঘটিয়েই নতুন চেহারার মহাকরণ তৈরি করা হচ্ছে।এখানে যেমন ব্রিটিশ আমলের স্থাপত্য কে নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরা হবে, তেমনই থাকবে নিরাপত্তা ও যোগাযোগের অত্যাধুনিক ব্যবস্থা।