ফের বঞ্চিত হতে চলেছে বাংলার শিক্ষার্থীরা! তিন বছরের সাধারণ ডিগ্রি কোর্সের সঙ্গেই এক বছরের বিএড পড়ার সুযোগ নেই বাংলার পড়ুয়াদের। এমনিতে তিন বছরের স্নাতক কোর্স (অনার্স ও পাশ) উত্তীর্ণ হওয়ার পর ২ বছরের বিএড প্রশিক্ষণ নিতে হয়। সেই বিএড পড়ার সরকারি সুযোগ সীমিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খরচও অনেকটাই বেশি। নয়া নির্দেশিকায় এক বছর সময় ও কম খরচসহ আনুষাঙ্গিক নানা ক্ষেত্রে সুবিধা পাবে শিক্ষার্থীরা। সেদিক থেকে স্নাতকের সঙ্গেই বিএড পড়ার সুযোগ তৈরি হলে বহু পড়ুয়াই তা লুফে নিত। কিন্তু কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মোতাবেক, আগামী বছরও সেই সুযোগ মিলবে না বলেই অনুমান।
শিক্ষক-প্রশিক্ষণের পদ্ধতি-প্রকরণ নিয়ে গত কয়েক বছরে বারবার অবস্থান বদল করেছে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। সর্বশেষ চলতি বছরের ২০ মে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনসিটিই) প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে যথাক্রমে দেশের ১৫ ও ১৩টি করে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের কেন্দ্রীয়, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাধারণ ডিগ্রি কলেজে স্নাতক কোর্সের পাশাপাশি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সুসংহত ডিএলএড এবং বিএড কোর্স চালু করার জন্য আবেদনপত্র চেয়েছিল। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের নামই নেই।
উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও অনুমোদিত কলেজের আবেদনের শেষদিন ছিল এ বছরের ৩ জুন থেকে ৩১ জুলাই। এতে সুবিধা হল-তিন বছরের স্নাতকের (বিএ/বিএসসি/বিকম) সঙ্গেই এক বছরের বিএড পড়াও যাবে। সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিক কারণেই এ রাজ্য থেকে কোনও আবেদনই জমা পড়েনি।
এমনিতে লরোটো, শ্রী শিক্ষায়তন, স্কটিশচার্চ, আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস, হাওড়া গার্লস, উলুবেড়িয়া এবং ডায়মণ্ডহারবার ফকিরচাঁদ কলেজ সহ রাজ্যের অনেক কলেজেই বহুদিন থেকে সাধারণ ডিগ্রি কোর্সের পাশাপাশি বিএড চালায়। অবশ্য সে ক্ষেত্রেও স্নাতকের ৩ বছরের কোর্স সম্পূর্ণ করে ছাত্রছাত্রীরা তবেই বিএডে ভর্তি হতে পারতেন।
তবে এনসিটিই-র নয়া নিয়মে সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়েছে বেসরকারি বিএড কলেজগুলি। এমনিতে লক্ষাধিক পড়ুয়া বিএড প্রশিক্ষণ নিয়ে বসে আছেন। শিক্ষকতার চাকরির সুযোগ কমছে, সেখানে অনুমোদিত কলেজে সাধারণ কোর্সের পাশাপাশি এবার বিএড কোর্সও সম্প্রসারিত হলে তাদের ভাগ্য কী হবে, তাতে আশঙ্কিত এই সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। কেন্দ্রের নয়া নির্দেশিকায় তাদেরও অন্তর্ভুক্তকরণের দাবি তুলে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাংশ মামলাও করেছে দিল্লী হাইকোর্টে।
যদিও রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি বিএড কলেজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ টিচার্স ট্রেনিং, এডুকেশন প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ডব্লুবিইউটিটিইপিএ) উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে অনেক দেরি আছে। এখনই এত আশঙ্কার কিছু নেই। বিকাশ ভবন নিশ্চয়ই সময়মতো ব্যবস্থা নেবে।’