৩৭০ ধারা রদ হওয়ার পর থেকেই উত্তেজিত হয়ে পড়েছে গোটা গেরুয়া শিবির। সকলের মুখেই একই কথা, এবার নাকি কাশ্মীরের ফর্সা মেয়েদের সহজেই বিয়ে করা যাবে। দিনকয়েক আগেই যোগীরাজ্যের বিজেপি বিধায়ক বিক্রম সিং সাইনি বলেছিলেন, ‘এবার আর ফর্সা টুকটুকে কাশ্মীরি মেয়েদের বিয়ে করতে কোনও বাধা রইল না। মোদীজি আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। গোটা দেশের স্বপ্ন পূরণ করেছেন।’ বিজেপি বিধায়কের এ হেন মন্তব্যে শোরগোল পড়েছিল আগেই। এবার সে পথে হেঁটেই ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা প্রত্যাহার নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে চমকে দিলেন খোদ হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। কাশ্মীরে আর্টিকল ৩৭০ বিলুপ্ত হওরার ফলে কী সুবিধা হল তা বোঝাতে গিয়ে খট্টর এই মন্তব্য করে বসেন যে, এবার কাশ্মীরি থেকে মেয়ে আনতে সুবিধা হবে!
আজ ফতেহবাদে রাজ্যস্তরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন বিজেপির এই মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লঞ্চ করা ‘বেটি পড়াও বেটি বাঁচাও’-এর সাফল্য নিয়ে আলোচনা করার সময়ই হঠাৎ আলটপকা মন্তব্য করে বসেন খট্টর। বলেন, ‘আমাদের মন্ত্রী ও পি ধনকড় আগে আমায় বলতেন, তিনি বিহার থেকে পুত্রবধু নিয়ে আসবেন। কিন্তু এখন সবাই বলছেন, কাশ্মীরের রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এখন আমরা কাশ্মীর থেকেও মেয়ে নিয়ে আসতে পারব।’ এক মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এ হেন মন্তব্য শুনে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে উঠেছে নিন্দার ঝড়। তাঁর এই নারীবিদ্বেষী এবং অশালীন মন্তব্যের জন্য বিরোধীদের পাশাপাশি নেটিজেনদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে খট্টরকে। মুজফফরনগরের কাতাউলির বিধায়ক বিক্রম সিং সাইনির মতোই তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়েছে৷
প্রসঙ্গত, ৩৫এ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা কোনও মহিলা ভিনরাজ্যের কোনও পুরুষকে বিয়ে করলে নিজের সম্পত্তি এবং কাশ্মীরের নাগরিকত্ব হারাতেন। তাই জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৫এ এবং ৩৭০ ধারা বিলোপ হওয়ার পর থেকেই একটি মজার রসিকতা চোখে পড়ছে নানা সোশ্যাল সাইটে। অনেকেই লিখছেন, এবার নাকি জম্মু-কাশ্মীরের মেয়েদের সঙ্গে নিশ্চিন্তে বিয়ে করা যাবে। ভূস্বর্গে কেনা যাবে জমিও। শুধু তাই নয়। উপত্যকার মেয়েরা কেমন দেখতে তা নিয়েও আগ্রহের শেষ নেই নেটিজেনদের মনে। ইতিমধ্যেই ‘জম্মু কাশ্মীরি গার্লস’ গুগল সার্চে প্রায় ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা যে কেউ এমন ভাবে উপস্থাপন করতে পারেন, তা হয়তো অনেকেই ভাবতে পারেননি। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর এ হেন মন্তব্যে তাই অনেকেই পুরুষতান্ত্রিকতা দেখছেন।