২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে দু’কোটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরীর। কিন্তু আদতে দেখা গেছে, তিনি প্রথমবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর, ৫ বছরে নতুন চাকরি তো হয়ইনি, উল্টে চাকরি গেছে বহু মানুষের। এবারও ভোটে জিতে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। আগেরবারের মতোই দেশের কর্মসংস্থানের পথ চওড়া করতে হরেক প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তাতেও কর্মসংস্থানের পথ খুব একটা মসৃণ হচ্ছে না, উল্টে কাজ হারিয়ে পথে বসতে হচ্ছে বহু মানুষকে।
দিন কয়েক আগেই জানা গিয়েছিল, রেলে মোট ৩ লক্ষ কর্মী কর্মীদের ছেঁটে দিতে উদ্যোগী হয়েছে মোদী সরকার। আর এবার মোদী সরকারের অসহযোগিতায় উৎসবের মরশুম শুরুর আগেই রাজ্যে বন্ধ হয়ে গেল দু’টি সিলিন্ডার তৈরির কারখানা৷ শিলিগুড়ি এবং বিষ্ণুপুরের ভাসায় বন্ধ হয়ে গেল কারখানা দুটি৷ তার ফলে কাজ হারালেন অন্তত হাজারখানেক শ্রমিক৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের ভাসাতে যে এলপিজি সিলিন্ডার ও ভালভ তৈরির কারখানা বন্ধ হয়েছে সেখানে কাজ করতেন পাঁচশো শ্রমিক৷
প্রসঙ্গত, কারখানাটিতে কেন্দ্র সরকারের ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেডের, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী সিলিন্ডার প্রস্তুত করা হয়। উত্তরবঙ্গের শাখা সচিবালয় উত্তরকন্যার পাশেই অবস্থিত কারখানাটি। স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ৩৬৪ জন শ্রমিক কাজ করতেন। শুক্রবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস দেখতে পান৷
ওই নোটিসের মাধ্যমে মালিকপক্ষ জানিয়েছে, কারখানায় প্রতি মাসে ২২০০ সিলিন্ডার তৈরি হত৷ কিন্তু কেন্দ্র সরকারের এলপিজি সংস্থাগুলি সিলিন্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। প্রচুর বিক্রি না হওয়া সিলিন্ডার প্রস্তুত হয়ে পড়ে রয়েছে কারখানায়। ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে কর্তৃপক্ষের৷ ফলে কারখানা চালিয়ে যাওয়া কোনভাবেই কর্তৃপক্ষের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না৷ তাই বন্ধের সিদ্ধান্ত বলে ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ৷
শুক্রবার সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে কারখানা বন্ধের নোটিস দেখেই ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেন শ্রমিকরা। কারখানার গেটের বাইরেই কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন তাঁরা। ফুলবাড়ি অঞ্চলের আইএনটিটিইউসির আহ্বায়ক ইয়ানুল হক মুন্সি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তে পুজোর মরশুমে শ্রমিকদের আর্থিক ক্ষতি হবে৷ আমরা শ্রম দফতরে অভিযোগ করব। প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।’