এবার নজিরবিহীন ভাবে একটানা ৩৮ দিনের দীর্ঘ অধিবেশন চলেছে সংসদে। অথচ অতীতে সংক্ষিপ্ত অধিবেশনে যে সিদ্ধান্ত নিতে এক সপ্তাহও সময় লাগেনি ইউপিএ সরকারের, এবার দীর্ঘ সময়েও তা করতে পারল না মোদী সরকার। সদ্য শেষ হওয়া ৩৮ দিনের অধিবেশন চলাকালীনও সম্পন্ন হল ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন। শুধু বিরোধী নয়, শরিক দলের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবেই সংসদের প্রথম অধিবেশনে মোদী সরকার ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করতে পারেনি, এবার এমনই দাবি করল তৃণমূল।
গতকাল এই অভিযোগ করে রাজ্যসভায় তৃণমূলের দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘সমন্বয়হীনতার কারণে সংখ্যা থাকা সত্ত্বেও প্রথম অধিবেশনে লোকসভায় ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনে করতে ব্যর্থ সরকার। সাম্প্রতিক অতীতে যা দেখা যায়নি।’
প্রসঙ্গত, ১৬ জুন থেকে ৭ আগস্ট অবধি চলেছে সংসদ। দ্বিতীয় দিনেই লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হয়েছিলেন ওম বিড়লা। কিন্তু ফাঁকা রয়ে যায় ডেপুটি স্পিকার পদটি। আসলে লোকসভার ডেপুটি স্পিকার সাধারণত বিরোধী দল বা সরকারের শরিক দল থেকে বেছে নেওয়া হয়। সে জন্য বিরোধী ও শরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হয় সরকার পক্ষকে। কিন্তু প্রায় দু’মাস অধিবেশন চলা সত্ত্বেও সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘অহঙ্কার’-এর ফলে ওই বৈঠকে বসতেই রাজি হয়নি বলেই অভিযোগ তৃণমূলের।
এ নিয়েই মুখ খুলে ডেরেক এবং লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে প্রথা ভেঙে দীর্ঘ অধিবেশন চালিয়েছে মোদী সরকার। কিন্তু ডেপুটি স্পিকার কে হবেন, তা ঠিক করতে ব্যর্থ তারা।’
ডেরেকের ব্যাখ্যা, ‘একাদশ লোকসভায় ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন হয়েছিল ১৯ তম দিনে। ত্রয়োদশ, চতুর্দশ ও পঞ্চদশ লোকসভায় ষষ্ঠ দিনে। প্রথম মোদী সরকারের আমলে ষষ্ঠদশে ৩৪ তম দিনে। আর এবার ৩৮ দিনেও তা পারল না সরকার।’ একই সঙ্গে বিল সংক্রান্ত আলোচনায় বিরোধীরা উপেক্ষিত হন বলেও সরব হন ডেরেক। তাঁর কথায়, “সরকার দু’ডজন বিল পাশ করেছে বটে কিন্তু যখনই মহিলা সংরক্ষণ বিল, তথ্য সংরক্ষণ আইন নিয়ে বিরোধীরা আলোচনা চেয়েছেন তখনই তা এড়িয়ে গিয়েছে।”