ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য যাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেইসব স্বাধীনতা সংগ্রামীকে ৯ আগস্ট রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সম্মান জানাবেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত হবে এই অনুষ্ঠান। এদিন সম্মানিত হবেন বাংলার ৫ স্বাধীনতা সংগ্রামী। ১৯৪২ সালের ৯ আগস্ট ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলন হয়েছিল। এই দিনকে মাথায় রেখেই আগামী ৯ আগস্ট এই সম্মান জানানো হবে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে মঙ্গলবার শিয়ালদা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হলেন ৪ স্বাধীনতা সংগ্রামী সুধীন্দ্রচন্দ্র মৈত্র, (১০০), পূর্ণেন্দুপ্রসাদ ভট্টাচার্য (৯৯), নেপালরঞ্জন ঘোষ (৯৬) এবং কার্তিকচন্দ্র দত্ত (১০০)। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শিয়ালদা স্টেশনে তাঁদের ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। আরেক স্বাধীনতা সংগ্রামী চুনীলাল সিংহ রায় (৯২) অসুস্থতার কারণে বিমানে যাবেন। তবে বয়েসের কাছে হার মানেননি কেউই। এমনকি বয়সের কাছে হার মানেনি স্মৃতিশক্তিও। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস গড়গড় করে বলে গেলেন পূর্ণেন্দুপ্রসাদ ভট্টাচার্য। ১৯২০ সালের ১০ অক্টোবর ময়মনসিংহে জন্ম। থাকেন বরানগরের মান্নাপাড়া রোডে। আর দু’মাস পরেই শতবর্ষে পা দেবেন। সোমবার পুত্র শঙ্খকে নিয়ে লাঠি হাতে মহাকরণে এসেছিলেন। কিছুদিন আগে মহাকরণের স্বাধীনতা সংগ্রামের দফতরে তিনি তাঁর জীবনপঞ্জি জমা দিতে গিয়েছিলেন।
পূর্ণেন্দুবাবু স্মৃতির পাতা হাতড়ে জানান, “১০ বছর বয়সে আমাকে স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত করেছিলেন সেজো মামা কৃষ্ণলাবণ্য গোস্বামী। কাজ ছিল বিপ্লবীদের রিভলভার, বোমা, বোমার মশলা পৌঁছে দেওয়া। সেজো মামা বহরমপুর সেন্ট্রাল জেলে মাস্টারদা সূর্য সেনের সঙ্গে ছিলেন। ১৯৩৮ সালে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বন্দিমুক্তি আন্দোলনে শুরু করেছিলাম। দু’দফায় সাড়ে ৮ বছরের জেল হয়। জেলে বসে বিএ পাশ করি”। পাশাপাশি এও জানান, “দিল্লী গিয়ে রাষ্ট্রপতি ও নরেন্দ্র মোদীকে বলব, দেশ আগে, তারপর সব”। এখনকার রাজনীতি সম্পর্কে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধয়ের সঙ্গে আমার অনেক দিনের পরিচয়। তাঁর প্রতি আমার শুভেচ্ছা রইল। রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, নেতাজি–সহ অন্য মনীষীদের কথা তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশি করে ছড়িয়ে দিতে হবে”।