গত সোমবারই বিল পাশ করিয়ে ৩৭০ ধারা রদ করেছে মোদী সরকার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় গোটা দেশ। তবে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার বাতিলকে চ্যালেঞ্জ করে এবার আবেদন জমা পড়ল সুপ্রিম কোর্টে। আইনজীবী এম এল শর্মা এই আবেদন পেশ করে বলেছেন, এই নির্দেশ অসাংবিধানিক। কারণ, রাজ্যের বিধানসভা ৩৭০ ধারা রদের প্রস্তাব পেশ করেনি। রাষ্ট্রপতির আদেশ যে আদালতে কেউ না কেউ চ্যালেঞ্জ করবেন, সে কথা জানাই ছিল। সেই অনুযায়ী বহু বিশিষ্ট আইনজীবীর মতামত নিয়ে তবেই এগিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রক। তবে শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় কী রায় দেয়, তার ওপর নির্ভর করবে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের ভবিষ্যৎ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদকে জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ার পর দেশের সব নাগরিক জম্মু-কাশ্মীরে স্থায়ী বসবাস করার, সরকারি চাকরি করার এবং কলেজে ভর্তি হওয়ার অধিকার পাবেন। এই কাজটা করার জন্য ৩৭০ ধারারই একটি উপধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। ওই উপধারা, যা রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ জারি করার অধিকার দিচ্ছে, তা জম্মু-কাশ্মীরের সাংবিধানিক পরিষদের সম্মতিসাপেক্ষ। কিন্তু কাশ্মীরের এই পরিষদ ১৯৫৬ সালে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। ফলে, আইনজ্ঞদের অনেকের বক্তব্য, এই অক্ষমতা এখন রাজ্যের বিধানসভার হাতে চলে গিয়েছে। এবং বিধানসভা ওই প্রস্তাব পাশ না করালে রাষ্ট্রপতি ওই আদেশ জারি করতে পারেন না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অখিল সিবাল বলছেন, রাজ্য সরকার সব রদবদলের প্রস্তাবে সায় না দিলে তা কার্যকর করা যায় না। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে এখন কোনও নির্বাচিত সরকার নেই। বিজেপি রাজ্যের জোট সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে। তা হলে কোন সরকারের অনুমতি নিয়েছে কেন্দ্র, প্রশ্ন তুলেছেন ওই আইনজীবী। তার মতে, আইনি গোলযোগ আছে এখানেই। একই খটকা সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আইনজীবী মালবিকা প্রসাদেরও। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবারই রাজ্যসভাকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে বলেন, যে প্রস্তাবটির সব রকম আইনি যাচাই হবে। কিন্তু একটা-দুটো নয়, একাধিক পিটিশন তৈরি হচ্ছে বলে আইনজীবী মহলের খবর।