ঐতিহ্যবাহী বেঙ্গল কেমিক্যালস আজ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। গত জুলাই মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেঙ্গল কেমিক্যালসের বিলগ্নীকরণ করা হবে। অথচ, গত ৬০ বছর ধরে ক্ষতির পর লাভের মুখ দেখেছে এই সংস্থা, ২০১৮-২০১৯ অর্থনৈতিক বছরে ২৫ কোটি টাকার উপর লাভ করেছে বেঙ্গল কেমিক্যালস।
সারা ভারতে এই সংস্থার বেশ কিছু ইউনিটের মধ্যে কলকাতার কাঁকুড়গাছি অঞ্চলের ইউনিটিই সব থেকে প্রাচীন। মূলত ইঞ্জেকশন, তেল, ক্যাপসুল ইত্যাদি উৎপাদিত হয় এই ইউনিটে। এই ইউনিটের কর্মী সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন। কর্মীদের গড় বয়স ৪৫। স্থায়ী কর্মী রাজু বণিক বললেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বাঙালি তথা ভারতবাসীকে স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্য আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় এই কোম্পানি তৈরি করেন। আজ কেন্দ্র সরকার সেই ইতিহাসকে নস্যাৎ করে বেঙ্গল কেমিক্যালসকে বিক্রি করতে চাইছে’। সবার মত উনিও জানেন না কী ভবিষ্যৎ তাঁদের।
বেঙ্গল কেমিক্যালসের কাঁকুড়্গাছি ইউনিটে কাজ করেন ৪০ জন ঠিকা কর্মী। বর্তমানে ২৩৫ টাকা দৈনিক মাইনে এবং খাবারের জন্য ৪০ টাকা ভাতা নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন গত ২০ বছর। কোম্পানির দুঃসময়ে স্থায়ী কর্মীদের সাথে রাত-দিন কাজ করে কোম্পানিকে লাভের মুখ দেখছেন যাঁরা, তাঁরা আজ ভয়ঙ্কর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়ে।
বিলগ্নীকরণের বিরুদ্ধে এবং ঠিকা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে গড়ে উঠেছে বেঙ্গল কেমিক্যালস শ্রমিক ঐক্য। স্থায়ী কর্মীরা পাশে দাঁড়িয়েছেন ঠিকা কর্মীদের। সমস্ত রাজনৈতিক শ্রমিক ইউনিয়ন এক সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছেন নিজেদের দাবিতে। শিবনারায়ণ সাউ বললেন, ‘আমাদের আর হারানোর মতো কিছু নেই, তাই লড়াই চলবেই নিজেদের দাবিতে।’