কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে দিল মোদী সরকার। বিরোধীদের বিপুল বিরোধিতার মুখেই রাজ্যসভায় এই প্রস্তাবটি পেশ করেন অমিত শাহ। সংসদের অনুমোদনের পরই রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই প্রস্তাবে সই করেছেন। রাষ্ট্রপতির সইয়ের সঙ্গে সঙ্গেই কাশ্মীরকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হল।
সোমবার, সংসদ শুরু হতেই রাজ্যসভায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন অমিত। সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধীরা তুমুল হই হট্টগোল জুড়ে দেন। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। এমনকী বিজনেস অ্যাডভাইসারি কমিটি মিটিং-এও এই বিল নিয়ে কোনও আলোচনা করা হয়নি। লিস্ট অপগ বিজনেসেও এই বিল আলোচনায় ছিল না। কয়েক মিনিটের জন্য মুলতুবি হয়ে যায় অধিবেশন। পরে ফের অধিবেশন শুরু হলে, বিরোধীদের হই হট্টগোলের মধ্যেই রাষ্ট্রপতির নির্দেশনামা পড়ে শোনান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার ঘোষণার পরই উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। অমিত শাহের বিবৃতির প্রবল বিরোধিতা করেন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ-সহ সমস্ত বিরোধী দলের নেতারা। আজাদ বলেন, ‘গণতন্ত্রকে আজ খুন করল বিজেপি।‘পিডিপি নেত্রী টুইট করে এই সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা করে বলেন, ‘আজ ভারতীয় গণতন্ত্রের কালো দিন। ৩৭০ ধারাকে বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। এটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক।‘ তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রের পরিকল্পনাটা এখন স্পষ্ট। রাজ্যের মানুষকে ভয় দেখিয়ে জম্মু-কাশ্মীর দখল করতে চাইতে তারা। কাশ্মীরকে যে কথা দেওয়া হয়েছিল, তা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত’।
উল্লেখ্য, ৩৭০ ধারা রদের পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য পুনর্গঠন বিলও এদিন আনা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরকে দু’ভাগ করা হবে। তার মধ্যে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে লাদাখ। অপর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হবে জম্মু-কাশ্মীর। লাদাখে কোনও বিধানসভা থাকবে না। কিন্তু জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা থাকবে। দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই প্রশাসনের শীর্ষে থাকবেন একজন করে লেফটেন্যান্ট গভর্নর।
এদিন ৩৭০ ধারা বিল পাস হওয়ার পরই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিরোধীরা। ‘রুল বুক’ নিয়ে চেয়ারম্যানের টেবিলের কাছে পৌঁছে যান তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর অভিযোগ, এত কম সময়ে যে বিল সার্কুলেট হয়নি, সেটি কীভাবে টেবিল হয়ে যাচ্ছে? সেটি কীভাবে রাজ্যসভায় পাস করে দিলেন অমিত শাহ?
ইতিমধ্যেই কাশ্মীরে গৃহবন্দি করা হয়েছে রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতিকে। গৃহবন্দি করা হয়েছে রাজ্যের অন্য আর এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা সাজ্জাদ লোনকে। ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। একই সঙ্গে বন্ধ ডিটিএইচ পরিষেবা ও টেলি যোগাযোগ।