লাল-হলুদ শিবিরে ঢাকঢোল বাজিয়ে শতবর্ষের উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শতবর্ষে ফুটবল দল কেমন হল তার পরীক্ষা শুরু হবে আজ। ডুরান্ড কাপে আর্মি রেড দলের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের আগে লাল-হলুদ কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার অস্বস্তি বাড়াচ্ছে অচেনা প্রতিপক্ষ ও অপছন্দের মাঠ! তাঁর অবস্থা ঠিক এক বছর আগে কলকাতায় প্রথম বার পা দেওয়ার মতোই। আবহাওয়া, পরিবেশ, সংস্কৃতি সবই তাঁর কাছে নতুন ছিল। ডুরান্ড কাপে অভিযান শুরু করার আগেও একই রকম অনুভূতি স্প্যানিশ কোচের। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে ধারণাই নেই। শুধু শুনেছেন, সেনা দলের ফুটবলারদের লক্ষ্য থাকে শারীরিক শক্তি ব্যবহার করে বিপক্ষের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়া।
শুক্রবার ইস্ট বেঙ্গল প্র্যাকটিসে দেখা গেল বিভিন্ন রকমের কম্বিনেশন পরখ করে দেখছেন ইস্ট বেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ আলেসান্দ্রো। কম্বিনেশন প্র্যাকটিসের সময়ে তিনি বারবার কথা বলছিলেন দুই সহকারী কোচ যোশেফ ফেরে আর বাস্তব রায়ের সঙ্গে। আসলে শতবার্ষিকীর প্রথম পর্যায়ের অনুষ্ঠানের মাঝেই শনিবার ডুরান্ডে খেলতে নামছে ইস্ট বেঙ্গল। শনিবার তাদের প্রতিপক্ষ আর্মি একাদশ (রেড)। তাই লাল হলুদে উৎসবের মাঝেই ফুটবল মাঠে আলেসান্দ্রোর দলের বড় পরীক্ষা। ডুরান্ড কমিটি চার জন বিদেশিকে নথিভুক্ত করতে পারবে বলে জানিয়েছে। খেলানো যাবে তিনজনকে। লাল হলুদ এখনও পর্যন্ত বোরহা ফার্নান্ডেজ, কাসিম আইদারা, ও হাইমে কোলাডোকে নথিভুক্ত করিয়েছে। কোলাডা মূলত উইং হাফ। কোনওভাবেই আদর্শ স্ট্রাইকার নয়। প্রথম ম্যাচে আর্মি রেড দলের বিরুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গলের চিন্তা গোল করার যোগ্য লোকের অভাব।
স্প্যানিশ কোচ আলেসান্দ্রোর প্রথম একাদশ বোঝা মুশকিল। তবুও প্র্যাকটিস যদি ইঙ্গিত হয় তবে আপফ্রন্টে খেলতে দেখা যাবে বৈথাং হাওকিপ ও বিদ্যাসাগর সিংকে। তবে আপফ্রন্টে কোলাডোকেও ব্যবহার করতে পারেন আলেজান্দ্রো। আর্মি (রেড) দলে সার্ভিসেসের বেশ কয়েকজন ফুটবলার আছেন। দৌড়ই দলটির সম্পদ। যদিও গড় উচ্চতা তেমন ভালো নয়। ইস্ট বেঙ্গলের ছোট মাঠে আলেসান্দ্রো ব্রিগেড আটকে গেলে শেষ দিকে বোরহাকে উপরে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে আলেসান্দ্রোর। সেট পিসের সময়ে তিনি উপরে উঠে আসবেন। এমনিতে বোরহার সঙ্গে স্টপারে খেলানো হচ্ছে মেহতাব সিংকে। দুই সাইড ব্যাকে সামাদ আলি ও অভিষেক আম্বেকর। বোরহা উঠে গেলে সামাদকে স্টপারে নিয়ে আসা হতে পারে। এই কম্বিনেশনে গত চারদিন প্র্যাকটিস করিয়েছেন আলেজান্দ্রো। তাঁর তত্বাবধানে ইস্ট বেঙ্গল আটদিন প্র্যাকটিস করে মাঠে নামছেন। সব মিলিয়ে লাল হলুদ ব্রিগেড প্রি-সিজন করেছে তিন সপ্তাহ। মরশুম শুরু করার আগে আলেসান্দ্রো বলেছেন, ‘আমাদের প্র্যাকটিস একটু পরে শুরু হয়েছে। তবে গত মরশুমের খেলোয়াড়দের ট্রেনিং সিডিউল পাঠানো হয়েছিল। তাই আমরা অনেকটাই তৈরি। খেলতে খেলতে বোঝাপড়া গড়ে উঠবে দলের মধ্যে।’ কোলাডো ও পিন্টু মাহাতো মারফত উইং ধরে আক্রমণ গড়ে তুলতে চাইছেন তিনি। মরশুমের অধিনায়ক ব্র্যান্ডনকে তিনি প্রথম একাদশে রাখবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।
ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে অবশ্য চার বিদেশিকে পাচ্ছেন না আলেসান্দ্রো। বোরখা, কাশিম ও খাইমে সান্তোস কোলাদো অনুশীলন করলেও শুক্রবারই যোগ দেন মার্তি ক্রেসপি। শনিবার সকালে বিমানবন্দর থেকেই সরাসরি চলে এসেছিলেন সাইয়ে। বললেন, ‘‘আলেসান্দ্রোর ডাকেই ইস্টবেঙ্গলে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার লক্ষ্য, দলকে সাহায্য করা।’’