বিরাট কোহলির সামনে এ বার চ্যালেঞ্জ, দল গড়ে তোলার। বিশ্বকাপে মিডল-অর্ডার বিভ্রাট এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই শুরু হবে সংস্কার। যেখানে সুযোগ দেওয়া হবে মণীশ পাণ্ডে, শ্রেয়স আইয়ারদের মতো তরুণ প্রতিভাদের। বোলিং বিভাগেও ভারতের ভরসা তরুণরাই। নবদীপ সাইনি, দীপক চাহার, খলিল আহমেদের মতো পেসার রয়েছেন। স্পিন বিভাগে দেখা যাবে রাহুল চাহার, ওয়াশিংটন সুন্দর, ক্রুণাল পাণ্ড্যদের। তারুণ্যে আস্থা রেখেই আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে ভারত।
এই সিরিজে এক ঝাঁক তরুণ ও প্রতিভাবান ক্রিকেটার নিজেদের সেরাটা মেলে ধরার সুযোগ পাবেন। নবদীপ সাইনি, রাহুল চাহার, খলিল আহমেদ, দীপক চাহাররা টি-২০ দলে আছেন। নজর থাকবে ঋষভ পন্থের উপর। কারণ, মহেন্দ্র সিং ধোনির বিকল্প হিসাবে তাঁকে ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। শ্রেয়াস আয়ার ফের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পাচ্ছেন। মণীশ পাণ্ডে, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ওয়াশিংটন সুন্দরের মতো ক্রিকেটারদেরও দেখে নিতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের বড় ভরসা রোহিত শর্মা, চোট সারিয়ে ফেরা শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। বোলিংয়ে ভুবনেশ্বর কুমারের সঙ্গী হতে পারেন খলিল। দুই স্পিনার খেলালে ক্রুনাল ও রবীন্দ্র জাদেজা খেলতে পারেন।
ভারতীয় তরুণ ব্রিগেড অনভিজ্ঞ হলেও আইপিএলে প্রত্যেকেই দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রাহুল ও দীপকের পারফরম্যান্স অত্যন্ত ভাল। ম্যাচের এক দিন আগে দুই ভাই মিলে এক সাক্ষাৎকারে নিজেদের স্বপ্নপূরণের গল্প শুনিয়েছেন। দীপক বলেছেন, ‘‘ভারতীয় দলের হয়ে একসঙ্গে খেলার স্বপ্ন নিয়েই ক্রিকেট শুরু করেছিলাম আমরা। আমাদের পরিবারও একই স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছে। রাহুলের সঙ্গে ভারতীয় দলের জার্সিতে খেলার সুযোগ পাব ভেবেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।’’দাদার কথা শুনে রাহুল বলছিলেন, ‘‘জেঠু আমাদের দু’জনকে সব সময় এই কথাই মনে করিয়ে দিতেন। সব সময় বলতেন ভারতের হয়ে তোদের খেলতে দেখতে চাই। তিনিই আমাদের কোচিং করিয়েছেন। জেঠুর স্বপ্নই এখন পূরণ করার দায়িত্ব আমাদের।’
ভারতীয় দলের একটাই সমস্যা, দুই ওপেনারকে বাদ দিলে সে রকম পাওয়ার হিটার নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাওয়ার হিটারের অভাব নেই। সুনীল নারাইনকে তাঁরা দলে ফিরিয়েছেন। অধিনায়ক ব্রেথওয়েট নিজে বড় শট নিতে পারেন। এ ছাড়াও এভিন লুইস, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরানদের প্রত্যেকেরই বড় শট নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। ক্যারিবিয়ান কোচ ফ্লয়েড রিফার তাঁর দল নিয়ে খুশি। বলছিলেন, ‘‘অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেলই আমাদের শক্তি। সবাই প্রচণ্ড মজা করে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করে। এটাই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ঘরানা। সেটা কখনওই বদলাতে চাইনি।’’
ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য আরও একটি খুশির খবর। রোহিত শর্মার সঙ্গে ওপেনার হিসেবে ফিরতে চলেছেন শিখর ধওয়ন। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করার দিনই বাঁ-হাতে চোট পেয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন ধওয়ন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ম্যাচে তিনি আবার ফিরতে চলেছেন ভারতীয় জার্সিতে। রোহিত শর্মার সামনেও অনন্য নজির গড়ার সুযোগ। টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ওভারবাউন্ডারির নজির গড়তে পারেন তিনি। ক্রিস গেলের (১০৫) চেয়ে এখনও পিছিয়ে রয়েছেন রোহিত (১০২)। গেল যে হেতু টি-টোয়েন্টি দলে নেই, তাই রোহিতের সামনে তাঁকে ছাপিয়ে যাওয়ার বড় সুযোগ আজ।
প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সাদা বলে বরাবরই বিপজ্জনক। ক্যাপ্টেন কার্লোস ব্রেথওয়েট মার্কিন মুলুকে ভারতকে প্রথম ম্যাচে ঝটকা দিতে চান। এভিন লুইস, শেলডন কটরেল, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরানের সঙ্গে অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন ও কার্লোস ব্রেথওয়েট অনেক হিসাব উলটে দিতে পারেন। পেস বোলিংয়ে ওসানে থমাস, কেমো পল, রোভম্যান পাওয়েলরা গতির বিচ্ছুরণে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলতে পারেন।