দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বল বিকৃতি ঘটিয়ে নির্বাসিত হয়েছিলেন ক্রিকেট থেকে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ফিরেছেন বিশ্বকাপের আগেই। তবে গতকালই ছিল সেই কলঙ্কিত ঘটনার পরে তাঁর প্রথম টেস্ট। টস জিতে ব্যাটিং নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক টিম পেন। ইংল্যান্ডের জিমি অ্যান্ডারসন মাত্র চার ওভার বল করে চোট পেয়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু এক বোলার কম নিয়েও ব্রড (৫-৮৬) এবং ওকসের (৩-৫৮) সামনে ভেঙে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু সেখানে একা লড়াই করে যান স্টিভ স্মিথ। করলেন নিজের সেঞ্চুরি। অ্যাসেজে করলেন নিজের নবম শতরান। তখন ইংল্যান্ডের গ্যালারিও উঠে দাঁড়িয়ে কুর্নিশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানকে।
বৃহস্পতিবারের এজবাস্টনে স্টিভ স্মিথ সত্যিই কোনও যোদ্ধার চেয়ে কম ছিলেন না। তাঁর ‘শত্রু’ তো শুধু স্টুয়ার্ট ব্রড, ক্রিস ওকস বা ইংল্যান্ডের অন্য কোনও বোলার ছিলেন না। তিনি লড়াই করেছিলেন তাঁর গায়ে লাগা বল বিকৃতি কাণ্ডের কলঙ্ক মুছে ফেলতে। তিনি লড়াই করেছিলেন এক বছর বাদে আবার টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি লড়াই করেছিলেন ধসে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংকে একটা সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দিতে।
পরিসংখ্যান বলছে, স্মিথ এ দিন ২১৯ বলে ১৪৪ করেছেন। মেরেছেন ১৬টি চার এবং দুটি ছয়। ১২২ রানে আট উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে দলকে তিনি পৌঁছে দেন ২৮৪ রানে। এই পরিসংখ্যানও চমকে দেওয়ার মতো। কিন্তু নিছক পরিসংখ্যানে মাপা যাবে না এই সেঞ্চুরিকে। অ্যাসেজে তাঁর সর্বোচ্চ রান ২৩৯। যা অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত তৃতীয়। তবে শুধুই সেঞ্চুরি নয়, এমন দায়িত্ব নিয়ে সুন্দর ইনিংস গড়তে দেখে স্টিভ ওয়ার কথাও মনে পড়ে যাচ্ছিলো ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। নব্বইয়ের দশকে স্টিভ ওয়া ৭২ টি অ্যাসেজ খেলে ১০ টি সেঞ্চুরি করেছিলেন। তাঁর ক্রিজে দাঁড়িয়ে থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সেই ছবিই ফুটে উঠেছিল এদিনের টেস্ট ম্যাচে। একইসঙ্গে স্মিথের এই ফিরে আসার লড়াই নিঃসন্দেহে জায়গা করে নেবে ক্রিকেটের বীরগাথায়। তাঁর ক্যারিয়ারের ২৪তম সেঞ্চুরি হয়ে থাকবে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ইনিংস।