পুজো আসতেই যেন কল্পতরু অবতারে অবতীর্ণ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই পুজোর উপহার দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন তিনি। দিন কয়েক আগেই ভাতা বাড়িয়েছেন রাজ্যের বিধায়ক-মন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও এসএসকে-এমএসকে শিক্ষকদের। ভাতা বেড়েছে কলকাতা পুরসভার ডেপুটি-মেয়র কাউন্সিলারদেরও। এবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই সরকারি কর্মী-অফিসারদের জন্য রাজ্যের ২২টি জায়গায় আবাসন তৈরি করছে সংশ্লিষ্ট দফতর। যেখানে প্রায় ৬৫০টি ফ্ল্যাট থাকবে। জানা গেছে, সরকারের গ্রুপ-বি এবং গ্রুপ-সি গ্রেডের অফিসারের পাশাপাশি গ্রুপ-এ গ্রেডের অফিসারদের জন্যও আবাসন তৈরি করা হচ্ছে। এগুলি সবই রেন্টাল হাউসিং এস্টেট।
প্রসঙ্গত, বরানগর ও শ্রীরামপুরের মাহেশে ইতিমধ্যে আবাসন তৈরি হয়ে গিয়েছে। বরানগরের এ কে মুখার্জি রোডে গ্রুপ-এ গ্রেডের অফিসারদের জন্য জি প্লাস সিক্স (সাততলা) আবাসন তৈরি হয়েছে। সেখানে মোট ২৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এই আবাসনে লিফটের সুবিধা রাখা হয়েছে। আবাসিকদের সুবিধার জন্য চারতলা বা তার বেশি উচ্চতার বাড়িতে লিফট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আবাসন দফতর। পাশাপাশি, শ্রীরামপুরের মাহেশে গ্রুপ-বি এবং গ্রুপ-সি ক্যাটিগরির অফিসারদের জন্য রেন্টাল হাউসিং এস্টেট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে ১৬টি ফ্ল্যাট। ওই সব ফ্ল্যাট সরকারি অফিসারদের ভাড়ায় দেওয়া হবে।
এছাড়াও যেসব নতুন জেলা তৈরি হয়েছে, যেমন আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং, ঝাড়গ্রাম— সেখানেও সরকারি কর্মচারী ও অফিসারদের জন্য আবাসন তৈরির কাজ চলছে। আলিপুরদুয়ার কোর্ট রাইস মিলে সরকারি কর্মী ও অফিসারদের জন্য ৩২টি ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের দুটি জায়গায় রেন্টাল হাউসিং এস্টেট তৈরি হচ্ছে। একটি চকভবানীতে অন্যটি খাদিমপুরে। চকভবানীতে তৈরি হচ্ছে ৬টি ফ্ল্যাট আর খাদিমপুরে তৈরি হচ্ছে ১২টি। ডায়মন্ডহারবারে ১৬টি ফ্ল্যাট এবং পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের কাছে নিমতৌড়িতে রেন্টাল হাউসিং এস্টেট তৈরির কাজ চলছে।
আরও যে ১৫টি আবাসন তৈরির প্রস্তাব রয়েছে, তারমধ্যে উত্তর দিনাজপুরের কর্ণজোড়ায় হবে ১২টি ফ্ল্যাট, ঝাড়গ্রামের বাছুরডোবায় বানানো হচ্ছে ৭২টি ফ্ল্যাট, নতুন জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা কালিম্পঙে হবে আট ফ্ল্যাটের রেন্টাল হাউসিং এস্টেট, জলপাইগুড়ির মালবাজারের হাউসিং এস্টেটে থাকবে আটটি ফ্ল্যাট, শিলিগুড়ির মিলনপল্লির আবাসনেও আটটি ফ্ল্যাটের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জেও একই ধরনের আবাসন হবে, যেখানে আটটি ফ্ল্যাট থাকবে। আবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরের দুটি আবাসনে মোট ৪৮টি ফ্ল্যাট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের তুলনায় দক্ষিণবঙ্গে সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা বেশি থাকায় এখানে ফ্ল্যাটের সংখ্যা অনেক বেশি থাকছে বলে আবাসন দফতর সূত্রে জানা গেছে। যেমন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে রেন্টাল হাউসিং এস্টেটে ৪৮টি ফ্ল্যাট থাকবে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতেও ৪৮টি ফ্ল্যাট থাকবে। আবার ওই জেলার তমলুকের কাছে নিমতৌড়ির আবাসনে মোট ৯৬টি ফ্ল্যাট তৈরি হবে। আসানসোলের কল্যাণপুরে তৈরি হবে রেন্টাল হাউসিং আবাসন। সেখানে থাকবে ১০০টি ফ্ল্যাট। এটাই সবচেয়ে বড় প্রকল্প। পুরুলিয়ার রাঁচি রোডেও অনুরূপ আবাসন তৈরির পরিকল্পনা করেছে আবাসন দপ্তর। সেখানে ৩২টি ফ্ল্যাট থাকবে।