গত সোমবারই নজরুল মঞ্চে জনসাধারণের সুবিধার জন্য এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের নাগরিকদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য ‘দিদিকে বলো’-র একটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়েছে। যেখানে ফোন করলে দিদির সঙ্গে নিজের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে সরাসরি কথা বলা যাবে। দেওয়া যাবে পরামর্শও। এই কর্মসূচীর প্রথম দিন থেকেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে মানুষের মধ্যে। এই প্রকল্পকে সফল করতে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কর্মসূচীর প্রচারে নেমে পড়লেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা।
আজ থেকে ‘দিদিকে বলো’ জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। গতকালও রাজ্যের কয়েকজন মন্ত্রী এই কর্মসূচির প্রচারের জন্য সাংবাদিক বৈঠক করেন। ‘দিদিকে বলো’ এই জনসংযোগ কর্মসূচিতে বলাই হয়েছে, ১০০ দিনে ১০০০ প্রতিনিধি ১০,০০০ গ্রাম ও শহর ঘুরবেন। মানুষের বাড়ি বাড়ি যাবেন। বুথের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাদের কোনও একজনের বাড়িতে রাত কাটাতে হবে। আজ থেকে এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। ‘দিদিকে বলো’ এই জনসংযোগ কর্মসূচির জন্য একটি ফোন নম্বরও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেটি হল ৯১৩৭০৯১৩৭০। ওয়েবসাইটের নাম www.didikebolo.com। ফোন করলেই দিদির সঙ্গে কথা বলা যাবে। অভাব অভিযোগ জানানো যাবে। গত দু’দিনে বহু ফোন সাধারণ মানুষ করেছেন। আজ থেকে শুরু হচ্ছে মানুষের কাছে যাওয়া ও রাত কাটানো।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খড়দা অরুণাচলের মোড়ে ‘দিদিকে বলো’ প্রচারে এসে অমিত মিত্র বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির প্রতি মানুষের অগাধ বিশ্বাস ও ভালবাসা আছে। মানুষের সঙ্গে আরও বেশি করে জনসংযোগ বাড়াতে, সরাসরি মানুষের সঙ্গে কথা বলতে, তাঁদের অভাব–অভিযোগ শুনতে তিনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাতে বিপুল সাড়া জেগেছে সর্বত্র। তাই প্রথম দিনই লক্ষ মানুষ ফোন করে জানিয়েছেন তাঁকে বিভিন্ন অভিযোগ। ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন ৫০ হাজার। অর্থমন্ত্রী বারবার বলেন, খড়দার রাস্তাঘাট, নিকাশি ব্যবস্থার প্রচুর উন্নতি হয়েছে।’
এলাকার মানুষের অভাব–অভিযোগ শুনতে এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিতে এবার অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণমন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জির উদ্যোগে ডোমজুড়ের একাধিক এলাকায় শুরু হল কমপ্লেন বক্স বসানো। বৃহস্পতিবার থেকেই ডোমজুড়ের সলপ, পাকুড়িয়া–সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ওই কমপ্লেন বক্স বসানো শুরু হয়ে গেল। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক রাজীব ব্যানার্জি বলেন, সারা বছরই ডোমজুড় এলাকার মানুষের সঙ্গে মিশে থাকি। তবুও এরপরেও কারও কোনও অভিযোগ বা পরামর্শ কিংবা প্রস্তাব থাকলে, ওই কমপ্লেন বক্সে তা জমা করতে পারবেন। ডোমজুড়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ওই কমপ্লেন বক্স বসানো থাকছে। প্রতিদিনই দিনের শেষে এগুলি দেখা হবে। কার কী পরামর্শ বা অভিযোগ আছে তা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রত্যেকের বক্তব্যই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ করা হবে। এক্ষেত্রে কারও কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। এদিনই ডোমজুড়ে রাজীবের উদ্যোগে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির সূচনা হয়। ডোমজুড়ের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই সংক্রান্ত ফোন নম্বর বিলি করা হয়। পাশাপাশি ডোমজুড়ের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রাজীববাবু নিজের ঠিকানা, মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর এবং ই–মেল আইডি দিয়ে আসেন। কারও কোনও বিষয়ে অভিযোগ বা বক্তব্য থাকলে প্রয়োজনে সরাসরি তাঁকেও জানানোর কথা বলেন রাজীববাবু। এলাকার মানুষের সেইসব বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে রাজীববাবু জানান। কারও কোনও পরামর্শ থাকলেও তা গ্রহণ করা হবে। কেউ কোনও সমস্যার কথা জানালে তাও দ্রুত খতিয়ে দেখা হবে। এভাবে ডোমজুড় এলাকার মানুষের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছেন রাজীববাবু। এদিন ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিকে ঘিরে ডোমজুড়ের মানুষের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। আগামী রবিবার ফের এই কর্মসূচির আওতায় ডোমজুড়ের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কথা বলবেন রাজীববাবু। সেইসঙ্গে ডোমজুড়ের বিভিন্ন গ্রামের চিকিৎসক, ডাক্তার প্রমুখ সম্মাননীয় ব্যক্তিদের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচির প্রচারের জন্য মেয়র ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, বিধায়ক স্মিতা বক্সি প্রচার করেছেন। গ্রামের বিধায়কদের বলে দেওয়া হয়েছে, আপনারা কোন গ্রামে যাবেন। রানীবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘আমি রানীবাঁধে রুদ্রা গ্রামে যাব। সেখানকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলব। পরের দিন আবার গিয়ে পতাকা তুলব। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নিজের কেন্দ্রে একজন বুথকর্মীর বাড়িতে রাত কাটাবেন।