উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের নহাটা যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে কলেজের ভেতরে ঢুকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসি) সদস্যদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ছাত্র সংসদের তালা ভেঙে মনীষীদের ছবি ভাঙচুরের অভিযোগও উঠছে তাদের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে কলেজের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নহাটা কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের পাশ কোর্সের ছাত্রছাত্রীদের প্রথম দিনের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল। এমন একটি দিনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে নবাগতদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য অধ্যক্ষকে অনুরোধ করা হয়। তিনি তার অনুমতি দেন। কথা ছিল এদিন প্রথমে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কলেজের ২০৭ নম্বর ঘরে এই কর্মসূচি পালন করবে। পরে অধ্যক্ষ নবাগতদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। শেষে এবিভিপি–র পক্ষ থেকেও পরিচিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেই কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই এবিভিপি–র ছাত্ররা বহিরাগতদের নিয়ে লাঠি হাতে কলেজে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।
কলেজের ছাত্র সংসদের–সহ সভাপতি নয়ন চক্রবর্তীর অভিযোগ, “এদিন এবিভিপি–র সদস্যরা আমাদের কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে কটূক্তি করে। আমরা তার প্রতিবাদ করায় গোলমালের সূত্রপাত। এর কিছুক্ষণ পরই বিজেপি–র স্থানীয় নেতৃত্বদের নিয়ে এবিভিপি ছাত্ররা জোর করে কলেজের ভেতরে ঢুকে আমাদের ছাত্রদের বেধড়ক মারধর করে। এতে অমিত ভৌমিক, অঙ্কন সরকার, অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী এবং পল্লব নন্দী নামে আমাদের ৪ ছাত্র জখম হন। এরপর তারা ছাত্র সংসদের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। ঘরের ভেতরে থাকা মমতা ব্যানার্জি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বিধানচন্দ্র রায়ের ছবি ভেঙে মাটিতে ফেলে দেয়। ঘরের টিভি, টেবিলের কাচ, চেয়ার–সহ যাবতীয় জিনিস ভাঙচুর করে”। এই ঘটনার জেরে কলেজের অধ্যক্ষের পাশাপাশি তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এবিভিপি দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে গোপালনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
কলেজের অধ্যক্ষ অর্ণব ঘোষ বলেন, “এদিন দুপুরে হঠাৎ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কয়েকজন ছাত্র ভয়ে আমার ঘরে আশ্রয় চান। পিছন পিছন কয়েকজন বহিরাগতকে নিয়ে মারমুখি হয়ে আমার ঘরে ঢুকে ওই ছাত্রদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করে এভিভিপি–র ছাত্ররা। এরপরই ছাত্র সংসদে ভাঙচুরের শব্দ পাই”।