ডুরান্ড কাপ দিয়েই মরশুম শুরু হচ্ছে কলকাতা ফুটবলে। প্রাক-মরশুম প্রস্তুতি কোন দল কেমন করেছে তা এবার বোঝা যাবে। মোহন বাগান জুলাইয়ের গোড়ায় গা ঘামানো শুরু করেছিল। সুব্রত ভট্টাচার্যের প্রশিক্ষণে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের অনুশীলন শুরু হয় তারও মাসখানেক আগে ১০ জুন। বৃহস্পতিবার সকালে দুই কোচই নিজেদের মাঠে ফাইনাল রিহার্সাল সেরে রাখলেন। মোহন বাগানের কোচ ভিকুনা জোর দিয়েছিলেন পজিশনাল ফুটবলের উপর। সাদা-কালো ব্রিগেডের বিরুদ্ধে তাঁর ফর্মেশন ৪-৪-২। তবে প্রথম একাদশ নিয়ে এদিন মুখ খুলতে চাননি তিনি। পক্ষান্তরে লড়াকু বাবলু ছিলেন খোশমেজাজে। মোহন বাগান নিয়ে তাঁর চিরন্তন আবেগে এখনও বিন্দুমাত্র মরচে ধরেনি। আজ লড়াই শুরু হতে চলেছে মোহনবাগান এবং মহামেডানের।
স্প্যানিশ আমার্ডা থামাতে সুব্রত ভট্টাচার্যের অস্ত্র কী? ‘‘কী আবার। আমি এ সব নিয়ে চিন্তা করি না। আর এতই যদি ভাল ফুটবলার সব হবে তা হলে স্পেন ছেড়ে ওরা ভারতে খেলতে এল কেন?’’ বলার সময় মহমেডান কোচের গলায় শ্লেষ। যা সুব্রতর বরাবরের বৈশিষ্ট্য। জামাই সুনীল ছেত্রী ও মেয়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত কাজে বেরিয়েছিলেন। তাই সরকারি সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি ময়দানের ‘বাবলু’। পাঠিয়েছিলেন দলের অধিনায়ক ও সহ অধিনায়ককে। দেশের এক নম্বর স্ট্রাইকার সুনীলের পাশে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে সুব্রতর মন্তব্য, ‘‘দু’দলে যে ভারতীয় ফুটবলাররা খেলবে সবাই উনিশ-বিশ। আর বিদেশি? দেখা যাবে কাল কে কী করে?’’
অন্যদিকে মিনি ডার্বিতে বঙ্গসন্তান কোচের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে কিবু যে ভাল ভাবেই হোম ওয়ার্ক করেছেন সেটা কথা বললেই বোঝা যায়। নিজের দল সম্পর্কেও তাঁর ভাবনা স্পষ্ট। ‘‘হাতে এক মাস সময় পেয়েছি। অনুশীলনে ছেলেদের দেখে খুশি। মরসুমের প্রথম ম্যাচ। সেরা খেলা হয়তো খেলতে পারবে না। তবে ম্যাচ খেলতে খেলতে দেখবেন উন্নতি চোখে পড়বে।’’ ইউরোপের বাইরে প্রথম বার কোচিং করতে আসা সবুজ-মেরুন কোচ সংযত। ‘‘তিকিতাকা শব্দটা শুনতে ভাল লাগে না। শুধু পাস-পাস খেলা আমার পছন্দ নয়। স্পেন পজেশনাল ফুটবল খেলে। আমার কিন্তু প্রিয় আক্রমণাত্মক ফুটবল,’’ বলে দেন কিবু। তাঁর অনুশীলনেও সেই ভাবনার ছায়া।
রিয়াল মাদ্রিদের জুনিয়র দলে খেলে আসা ফ্রান গনসালেজকে আঠারো জনের দলে রাখলেও, শুরুতে নামানো হচ্ছে না। তিন স্বদেশীয়র খেলা দেখতে দেখতে ফ্রান অবশ্য বলছিলেন, ‘‘আমি এখনও পুরো ফিট নই। বড় জোর তিরিশ মিনিট খেলতে পারি। কোচকেও সেটা বলব।’’ তার একটু পরেই অবশ্য চামোরোর মন্তব্য, ‘‘দল জিতবে যেমন চাইছি। তেমনই নিজে প্রথম ম্যাচে গোল করতে চাই। বার্সেলোনায় শিখে এসেছি, স্ট্রাইকার গোল না করতে পারলে তার দাম নেই।’’ মোহনবাগানের চার স্প্যানিশের মধ্যে ফ্রান আর চামোরোই ইংরেজি জানেন। চামোরোর সঙ্গে ফরোয়ার্ডে শেখ ফৈয়াজ না আজহারউদ্দিন মল্লিক তা বলতে চাননি কিবু। তবে নিজের বেছে আনা স্পেনের ফুটবলারদের উপর যে তিনি অনেকখানিই নির্ভর করছেন তা সকালের অনুশীলনে স্পষ্ট।
মোহন বাগানে স্প্যানিশ আধিক্যকে আফ্রিকান পাওয়ার ফুটবল দিয়ে রুখতে চান সুব্রত। শুক্রবারের ম্যাচে তাঁর বিদেশিরা হলেন নাইজেরিয়ার করিম ওমোলোজা, উগান্ডার মুসা মুডডে ও আইভরি কোস্টের আর্থার কোশি। সুব্রত এদিন বলেন, ‘ভারতীয় ফুটবলে শুধুই ব্যাকপাস, স্কোয়ার পাস আর মিসপাস। নীচ থেকে ঈশ্বরের নামে লম্বা বল তুলে দিয়েই সবাই খালাস। তাই মোহন বাগানে স্প্যানিশ ফুটবলার আছে না রুশ, তা নিয়ে ভাবছি না।’