ডিজিট্যাল ইন্ডিয়ার কথা শুনে টেলিকম শিল্প আপাত ভাবে খুশি হলেও ডিজিট্যাল ইন্ডিয়া যে আদতে ভাঁওতা তা স্পষ্ট হতে সময় লাগেনি। টেলিকম শিল্পের দাবি, ডিজিট্যাল ইন্ডিয়ার বার্তায় যে খুশি ছড়িয়েছিল, তা মুছে যায় চড়া করের হার ও বিভিন্ন ধরনের ফি কমানোর সুরাহা না মেলায়। ঋণে জর্জরিত সংস্থাগুলির মূল সমস্যা যেগুলি। আর শেষে উদ্বেগ বাড়ে অপটিক্যাল ফাইবারের উপর আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব শোনার পরে। একাংশের আশঙ্কা, ৪জি ও ৫জির মতো পরিষেবার পরিকাঠামো নির্মাণ এতে সাময়িক ধাক্কা খাবে। আর হচ্ছেও তাই। টেলিকম শিল্পে রক্তক্ষরণ অব্যাহত। রিলায়্যান্স জিও বাদে বাকি দু’টি বেসরকারি সংস্থাই চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে বড় লোকসানের কবলে পড়ল। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, গলাকাটা মাসুল যুদ্ধের জের এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি এই শিল্প। গ্রাহক পিছু আয় কিছুটা বাড়লেও ওই দুই সংস্থা লাভের মুখ দেখেনি।
এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ৪,৮৭৩.৯ কোটি টাকার নিট লোকসানের কথা জানিয়েছিল ভোডাফোন-আইডিয়া। এর পর বৃহস্পতিবার ভারতী এয়ারটেলও ২,৮৮৬ কোটি টাকা লোকসানের কথা জানাল। যা পূর্বাভাসের চেয়েও বেশি। গত অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ৯৭ কোটি এবং শেষ ত্রৈমাসিকে ১০৭.২ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল তারা। তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএল এবং এমটিএনএল-ও।
সস্তা মাসুলের ফলে গ্রাহকদের মোবাইল ব্যবহার, বিশেষ করে ডেটার ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকের দাবি, এক দিকে লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রামের চড়া দর গুনতে গিয়ে, অন্য দিকে বাজারের তীব্র মাসুল যুদ্ধের জেরে আয়ে টান পড়েছে টেলিকম সংস্থাগুলির। ফলে সুষ্ঠু পরিষেবার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নির্মাণে লগ্নি করতে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছে তারা। এক বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘পরিস্থিতি এখনও অন্ধকারাচ্ছন্ন।’’