১৭ তম লোকসভার প্রথম অধিবেশন বসা ইস্তক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে প্রায় রোজই কোনও না কোনও বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার যে ট্রেন্ড শুরু করেছে কেন্দ্র, তা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল তৃণমূল। তড়িঘড়ি বিল পাশ করানো নিয়ে মোদী সরকারকে একহাত নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা তথা প্রধান জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছিলেন, ‘আমরা পিৎজা ডেলিভারি করছি না কি আইন প্রণয়ন করছি।’ আর এবার সংসদের কার্যসূচী বদল নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
সম্প্রতি দেখা গেছে, সংসদের কার্যসূচী রাত ৯টার পর বদলে যাচ্ছে সংশোধিত কার্যসূচীতে। সাংসদেরা রাত ১০টায় বাড়ি ফিরে দেখছেন পরের দিনের আলোচ্য বিল পাল্টে গিয়েছে! এই বিষয়টি নিয়ে গতকাল সংসদের ভিতরে এবং লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে সরব হয়েছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের ঘটনা সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী। কার্যসূচী বদল নিয়ে আজ লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় অভিযোগ করেন। পরে লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে স্পিকারের সামনেও সরব হন সুদীপ।
প্রসঙ্গত, গত দু’সপ্তাহ ধরে যে ভাবে সংসদে বিল পাশ করানো হচ্ছে, তা নিয়ে রাজ্যসভা এবং লোকসভায় ধারাবাহিক ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অভিযোগ, গভীর রাতে গোপনে বিল আনা হচ্ছে। সাংসদদের সংশোধনী দেওয়ার সুযোগ তো দূরস্থান, ভাল করে কেউ বিষয়টি পড়তেও পারছেন না। লোকসভায় সুদীপ বলেন, ‘চরম বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আপনি (স্পিকার) যখন বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে কার্যসূচী দিচ্ছেন, সেটা রাত ৯টার পর পাল্টে দেওয়া হচ্ছে! আমাদের কোনও ধারণাই থাকছে না যে, পরের দিন কোন বিল আনা হচ্ছে।’
ঘটনা হল, বুধবার যে কার্যসূচী স্পিকারের অফিস থেকে দেওয়া হয়েছিল, তাতে তিনটি বিল আলোচনা এবং পাশের কথা বলা হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল ট্রাইবুনাল কমিশন, বাঁধ সুরক্ষা বিল। কিন্তু গতকাল সকালে দেখা যায়, দেউলিয়া বিধি বিল, পকসো এবং আরবিট্রেশন অ্যান্ড কনসিলিয়েশন বিল আনা হয়েছে। এমনটা ঘটার পরই কার্যসূচী বদলের সম্পর্কে সংসদীয় নিয়মবিধি তুলে ধরে সৌগত বলেন, ‘সংসদ কখনই কারও খেয়ালখুশি মতো চলতে পারে না। সংসদীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী অথবা সেক্রেটারি জেনারেল— কেউই তাঁদের ইচ্ছামাফিক সংসদীয় কার্যসূচী এ ভাবে বদলাতে পারেন না।’