পরিবেশ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন দুপুর থেকেই। পদযাত্রার পর সেই বিষয়ক অনুষ্ঠানেই ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে। আর তাই আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিত হওয়া সম্ভব নয়। সেইমতো তাঁর লেখা শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ক্লাবের কাছে। যা ভরা নেতাজি ইন্ডোরে সমর্থকদের সামনে পড়ে শোনালেন ক্লাবের সভাপতি ডঃ প্রণব দাশগুপ্ত। কিন্তু তিনি যে শুধুই মুখ্যমন্ত্রী নন, তিনি যে একজন ফুটবলপ্রেমীও। আর তাই ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল সম্পর্কিত এই উৎসব থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারলেন না। ঝটিকা সফরে হঠাৎই ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে গেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঞ্চে তখন কপিল দেব, বাইচুং ভুটিয়া, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো তারকারা উপস্থিত। মঞ্চে উঠেই তিনি এগিয়ে গেলেন তাঁদের দিকে। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর স্বকীয় মেজাজেই মাইকের সামনে রাখলেন বক্তৃতা। দর্শকপুষ্ট আসনে তখন হাততালির ঝড়। নিজের ছোট্ট বক্তৃতায় বললেন, “আমার এখানে আসার কথা ছিল না। একটা অন্য অনুষ্ঠানে ছিলাম। হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলাম। মনটা কেমন কেমন করছে। ডিজি আর সিপি-কে বললাম নেতাজি ইন্ডোর যাব।”
মঞ্চে বসে থাকা তারকাদের সামনেই এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বললেন, সরকারের পক্ষ থেকে যাতে ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ উপলক্ষে একটা অনুষ্ঠান করা যায় তা দেখতে। বাংলার ফুটবলের তিন প্রধান ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহামেডান স্পোর্টিং-এর গরিমার কথাও শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায়। মুখ্যমন্ত্রীর গলায় ‘জয় ইস্টবেঙ্গল’ শুনে তখন নেতাজি ইন্ডোরে থাকা লাল-হলুদ সমর্থকরাও উচ্ছ্বসিত।
তবে নিজের বক্তৃতায় এড়িয়ে যাননি তথাগত রায়ের ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কিত সেই কুখ্যাত মন্তব্যটিও। বুধবার একটি টুইট করেছিলেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। সেই টুইটে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, এখানে থেকে কেন ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন করবেন সমর্থক, কর্তারা। লাল-হলুদের শতবর্ষের মঞ্চে তার চরম বিরোধিতা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেউ কেউ আমার কানে দিল, কেউ নাকি বলেছে এখানে থেকে কেন ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন? আমি এর জন্য লজ্জিত। সমর্থকরা জীবন দেওয়ার জন্য তৈরি থাকে কিন্তু ক্লাবের অসম্মান কোনোদিন সহ্য করে না।” তবে একবারও তথাগত রায়ের নাম উচ্চারণ করেননি মমতা। কিন্তু উপচে পরা নেতাজি ইন্ডোরের বুঝে নিতে অসুবিধে হয়নি কী ইঙ্গিত করছেন তাঁদের দিদি।